নবদম্পতি নীলা ও নাহিদ। দুজনেই কর্মজীবী। এক সপ্তাহ্ ধরে অপেক্ষা করছেন ছুটির দিনের, একটা নতুন সিনেমা দেখতে যাওয়ার কথা। কিন্তু ছুটির দিনের সকালেই নীলার মায়ের ফোন। সন্ধ্য়েবেলায় আত্মীয়স্বজনের একটা গেটটুগেদার আছে। নীলা আর নাহিদ না থাকলেই নয়। মায়ের ভাষ্য, ‘সিনেমা তো পরে দেখতেই পারবে, আত্মীয়স্বজন তোমাদের একসঙ্গে দেখতে চাইছে। চলে এসো সময়মতো।’ মন খারাপ হলেও নীলা বা নাহিদ কেউ ‘না’ বলতে পারল না। শুধু সেবারই নয়, বিয়ের পর পর প্রায় প্রতি সপ্তাহেই এ ধরনের ঘটনা চলতে লাগল।
ঘটনা কেবল এমনই হয় তা নয়; ধরুন–আপনার শরীর খারাপ। কিন্তু দিন পনেরো আগেই একটা দাওয়াতে যাবেন বলে কথা দিয়েছেন। কিন্তু শরীর খারাপ হওয়ায় সেখানে যেতে পারবেন না বলে জানালেন। কিন্তু পীড়াপিড়ি, জোর-জবরদস্তি এড়াতে পারলেন না। শরীর খারাপ নিয়েই গেলেন। বাড়ি ফেরার পর শরীর আরও খারাপ করল। এর দায় আসলে কার? আমাদের ‘না’ বলতে না পারার দায় ও ফলাফল কিন্তু আমাদেরই। কিন্তু ছোট্ট এই শব্দ, মানে ‘না’ বলা এত কঠিন কেন? ভিনদেশিরা আমাদের এই ভূমি শাসন করতে বারবারই এসেছে। ভূমিপুত্র হিসেবে প্রজন্মের পর প্রজন্মান্তর ‘না’ বলতে আমরা পারিনি। সেই প্রজন্মান্তর ক্ষত (ইন্টার জেনারেশনাল ট্রমা) এখনো আমাদের ডিএনএ বহন করছে এপিজেনেটিকসের মতো। কাজেই না বলতে না পারাটা অনেকখানি মজ্জাগত আমাদের।