প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে যে কটি বিষয় নিয়ে অস্বস্তি আছে, সেগুলোর একটি হলো সীমান্ত হত্যা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে সীমান্ত সম্মেলন বা পতাকা বৈঠকে প্রতিবারই সীমান্তে আর গুলি চালাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর রক্ষা হয় না। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সূত্রের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে সীমান্তে গুলিতে নিহত হয়েছেন ১৫২ বাংলাদেশি।
চলতি বছরের ৫ মার্চ ঢাকার পিলখানায় ‘বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫৪তম সীমান্ত সম্মেলন’ শুরু হয়। আর ৯ মার্চ সকালে যৌথ আলোচনার পর দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ওই সম্মেলন। ঢাকায় সীমান্ত সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে বিএসএফের প্রধান ফিরে যাওয়ার পর সীমান্তে আরও মারমুখী হয়ে ওঠেন বিএসএফ সদস্যরা, যা রীতিমতো বিস্ময় সৃষ্টি করে। সীমান্ত হত্যার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সীমান্তে গুলিতে চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে যেখানে দুজন নিহত হন, সীমান্ত সম্মেলনের পরের তিন মাসে সেখানে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১। প্রতিবারই গুলিতে মানুষ খুনের পর বিএসএফ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর কথা বলে থাকেন। তাঁদের দাবি, সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশিরা তাঁদের ওপর আক্রমণ করায় গুলি চালাতে বাধ্য হন। কিন্তু নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ কীভাবে সশস্ত্র বাহিনীর ওপর আক্রমণ করে, সেই প্রশ্নের জবাব কখনোই দেন না বাহিনীর কর্মকর্তারা।