২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল মাঝরাত! কর্মস্থল রাজধানীর বংশাল থানা থেকে পুরান ঢাকার ওয়ারীর বাসায় ফিরছিলেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গৌতম রায়। পথে ধোলাইখালে সন্দেহজনক গতিবিধি দেখে তিনজনকে তিনি তল্লাশি করতে যান। তাঁদের একজন গৌতমের বুকের বাঁ পাশে ও কোমরের পেছনে গুলি করেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান গৌতম। পরিবারের দাবি, এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
এই খুনের পর ১৪ বছর পেরিয়ে গেছে। এখনো শেষ হয়নি মামলার বিচার। অভিযোগ গঠনের পর ৪৭ সাক্ষীর মাত্র ১৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। শুধু গৌতম রায়ই নন, গত ২১ বছরে রাজধানীতে অন্তত ২০ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে মোট ১৮টি। এর মধ্যে মাত্র ৩টি মামলার রায় হয়েছে। তদন্তাধীন আছে দুটি। তিনটি মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে। বাকিগুলো বিচারাধীন। তদন্তে ধীরগতির সুযোগ নিয়ে এসব মামলার বেশির ভাগ আসামি জামিনে। কেউ কেউ আবার পালিয়েছেন বিদেশে।
নিহত গৌতমের ভাই তিলক রায় সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ সদস্য হত্যার বিচারও যদি না হয়, এর চেয়ে দুঃখের আর কী হতে পারে? যিনি অসংখ্য মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন, তাঁর হত্যার রহস্যই উদ্ঘাটিত হলো না। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটিও এত বছরেও উদ্ধার হয়নি। এ অবস্থাতেই পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে।’ তিলক রায়ের অভিযোগ, নিখুঁত নিশানায় গুলি করে খুন করা একটি ঘটনাকে পুলিশ খুব সাধারণভাবে উপস্থাপন করেছে। তাঁদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও মামলাটিতে পুলিশ বাদী হয়। এ জন্য তাঁরাও বিচারে গতি ফেরাতে তেমন কিছু করতে পারছেন না।