১৮ মে ২০২৪ তারিখের প্রথম আলোয় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যের টাউনশিপ বুথিডং ও মংডুতে শত শত মানুষের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। রাতের বেলায় এসব ঘরবাড়িতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
আগুন দেওয়া বাড়িঘরের অধিকাংশের মালিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোহিঙ্গা নাফ নদী অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। শহরগুলোর দখল নেওয়া আরাকান আর্মি এই অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী বলে বিভিন্ন রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরাকান আর্মি অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ২৪ মে আরাকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা ইউনাইটেড লিগ অব আরাকান একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, বিদ্যমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যাতে অসামরিক নাগরিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, আরাকান আর্মি জাতি-ধর্মনির্বিশেষে তাদের সবার নিরাপত্তাবিধানের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পাঁচ লক্ষাধিক অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু আশ্রয়ে আছে।
মংডু ও বুথিডং টাউনশিপে এদের সংখ্যা দুই লাখ, যার শতকরা ৮০ ভাগ মুসলিম। অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুদের সহায়তা দেওয়ার জন্য ঘোষণাপত্রে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা এবং এনজিওগুলোর প্রতিও আহ্বান জানানো হয়।
বুথিডং ও মংডুতে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং হত্যা-নির্যাতনের জন্য আরাকান আর্মি দোষারোপ করেছে মিয়ানমার সেনাদের। কিন্তু ২৪ মে জেনেভায় জাতিসংঘের প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয় যে অগ্নিসংযোগ শুরু হয় ১৭ মে, শহর দুটি থেকে সেনাদের পশ্চাদপসরণ এবং আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের দুই দিন পর।
পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের সূত্রে ব্রিফিংয়ে বলা হয় যে আরাকান আর্মি স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করছে। কমপক্ষে চারটি শিরশ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
গত তিন মাসে বিভিন্ন সূত্র থেকে কতগুলো উদ্বেগজনক খবর জনসমক্ষে এসেছে। তার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো।
১. গত মার্চে বুথিডং টাউনশিপের প্রধান সড়কে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা সংঘাতবিরোধী বিক্ষোভ করেন। মিছিলের ব্যানার–ফেস্টুনে আরাকান আর্মিবিরোধী স্লোগান লেখা হয়। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি বাহিনী রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক মাঠে নামিয়েছিল।