পচা শামুকে পা কাটার মতো ঘটনা ঘটেছে। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী কারচুপি থেকে সরকারি নথি হাতানোর অভিযোগ নিয়ে তিন-তিনটি ফেডারেল মামলা থাকলেও সেসবে ফেঁসে না গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফাঁসলেন এমন এক মামলায়, যার বৈধতা নিয়ে আইনজীবীরা এখনো নিশ্চিত নন।
নিউইয়র্কের স্টেট আদালতে এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধের জন্য টাকা দিয়ে যে মামলা, তা এতই দুর্বল যে বাইডেন প্রশাসনের বিচার বিভাগ সে মামলা নিয়ে এগোতে চায়নি। এমনকি ম্যানহাটানের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি এলভিন ব্রাগ, যিনি এই মামলা করে শেষ পর্যন্ত জিতে গেলেন, তাঁর অফিস পর্যন্ত এই মামলা না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ব্রাগের অফিসের দুজন অ্যাটর্নি পদত্যাগ পর্যন্ত করেছিলেন। মামলাটি দুর্বল, এতে জেতা অসম্ভব—এমন কথা এলভিন ব্রাগের অফিস থেকেই বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পচা শামুকেই পা কাটল ট্রাম্পের।
এককথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কখনো কোনো ক্ষমতাসীন বা সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলায় দোষী প্রমাণিত হননি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন থেকে ডেমোক্রেটিক পার্টির হেঁজিপেঁজি সব নেতাই বলছেন, এই মামলার রায়ে অবশেষে প্রমাণিত হলো, আইনের চোখে সবাই সমান।
ট্রাম্পের কোম্পানির সাবেক প্রধান নির্বাহী অফিসার জ্যাক ও’ডনেল মন্তব্য করেছেন, এই লোকটি সারা জীবন ব্যবসার নামে নয়ছয় করে গেছেন, একবারও ধরা পড়েননি। অবশেষে তিনি যে ধরা পড়লেন, সে জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
কিন্তু এমন অভাবনীয় ঘটনার পরও ট্রাম্প যে রাজনৈতিকভাবে দারুণ ভড়কে গেছেন, তা মোটেই নয়। তাঁর অনুগত সমর্থকদের অধিকাংশই এখনো মনে করেন, ট্রাম্প কোনো অপরাধ করেননি। পুরো ব্যাপার বাইডেন প্রশাসনের সাজানো।
এই কথার কোনো সত্যতা নেই, কারণ মামলাটি ফেডারেল নয়, স্টেট পর্যায়ের। কিন্তু ট্রাম্পের সমর্থকেরা যুক্তি মেনে চলেন—এ কথা কেউ বলবে না। তাঁদের মধ্যে এমন লোকের অভাব নেই, যাঁরা ট্রাম্পকে যিশুর অবতার ভাবেন। তিনি কোনো অপরাধ করতেই পারেন না। ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, ফিফথ অ্যাভিনিউর ওপর আমি যদি কাউকে গুলি করে মেরেও ফেলি, আমার সমর্থকদের কেউ আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।