ভারতের নির্বাচনে এবার ‘বাংলাদেশ কার্ড’ নেই কেন

সমকাল শেখ রোকন প্রকাশিত: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৯

ভারতের নির্বাচন কমিশন মাসখানেক আগেই অষ্টাদশ লোকসভার দামামা বাজিয়ে দিয়েছিল। আজ শুক্রবার, প্রথম দফার ১০২টি আসনে ভোটযুদ্ধ। ২৬টি রাজ্য ও ৮টি ইউনিয়ন টেরিটোরির ৯৬ কোটি ৮০ লাখ সম্ভাব্য ভোটার ৭ দফায় ৫৪৩টি আসনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। প্রায় তিন মাসের এই ‘গ্রেটেস্ট শো অন ডেমোক্রেসি’ ৪ জুন ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হবে।


কেবল ভৌগোলিক ঘনিষ্ঠতার জন্য নয়; অভিন্ন আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসের কারণেও বাংলাদেশের পক্ষে ভারতের লোকসভা নির্বাচন কিংবা সীমান্তবর্তী অন্তত পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখা কঠিন। আরেকটি কারণেও লোকসভা নির্বাচন সীমান্তের এ-পাশেও মনোযোগ আকর্ষণ করে: নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ‘বাংলাদেশ কার্ড’ খেলার প্রবণতা। কিন্তু লক্ষণীয়ভাবে এবারের লোকসভা নির্বাচন ব্যতিক্রম। আগের মতোই সর্বভারতীয় ও আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে যুযুধান বিতর্ক ও বাগাড়ম্বর চলছে; কিন্তু ‘বাংলাদেশ কার্ড’ কানে বাজছে না। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আঞ্চলিক দলগুলোর পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টিও (বিজেপি) লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে এই কার্ড খেলায় অভ্যস্ত। 


মনে আছে, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে খোদ নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে এসে জনসমাবেশে বলেছিলেন, বিজেপি সরকার গঠন করতে পারলে এসব রাজ্য থেকে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বহিষ্কৃত হবে। ওই নির্বাচনে বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পর বোঝা গিয়েছিল, ওই হুমকি নিছক নির্বাচনী বাগাড়ম্বর। বরং সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে কংগ্রেস সরকারের সময় আটকে থাকা স্থল সীমান্ত চুক্তি পাস করেছিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। কংগ্রেস জামানার তুলনায় বিজেপি জামানায় দুই ‘বন্ধু রাষ্ট্রের’ আর্থসামাজিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছিল।


কূটনীতি ও রাজনীতির চশমা যে ভিন্ন– ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনের দুই বছর পর ২০১৬ সালে আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার কারণে নরেন্দ্র মোদি নিজে সরাসরি বলেননি, কিন্তু বিজেপির প্রথম সারির নেতারা ফের ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ বহিষ্কার ইস্যু নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। সম্ভবত সবচেয়ে এগিয়ে থাকতেন বিজেপির তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত অনিলচন্দ্র শাহ। লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচন এলেই তিনি ‘বাংলাদেশ কার্ড’ খেলতে পছন্দ করতেন।


যেমন ২০১৫ সালে ডিব্রুগড় গিয়ে বলেছিলেন, আসামের তৎকালীন কংগ্রেস সরকার ও মুসলিম সংখ্যাগুরু রাজনৈতিক দল এআইইউডিএফ মিলে রাজ্যটির একটি অংশ ‘বাংলাদেশ বানাতে চায়’। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণাকালে বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশিদের খুঁজে খুঁজে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারণায় বলেছিলেন, রাজ্যটিতে বিজেপি জয়লাভ করলে এমন ব্যবস্থা করা হবে– বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে মানুষ দূরে থাক, পাখিও প্রবেশ করতে পারবে না।


বিজেপি যে এবার বাংলাদেশ কার্ড খেলছে না, সেটা খোদ অমিত শাহকে দিয়েই বোঝা যায়। গত বছর মে মাসে পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোলে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে গিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতে বন্ধন অনেক গভীর। আমাদের সংস্কৃতি, ধর্ম, আচার ও জীবনযাত্রা হাজার বছর ধরে মিলেমিশে রয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে এই বন্ধন কেউ ছিন্ন করতে পারবে না।’ (টাইমস অব ইন্ডিয়া, ৯ মে ২০২৩)। 


বস্তুত ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনেই ‘বাংলাদেশ কার্ড’ খেলার গুণগত পরিবর্তন দেখা গিয়েছিল। সেবার বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্যগুলোতে অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে এই ইস্যুতে সরাসরি বাংলাদেশের নাম উচ্চারিত হয়নি। অবশ্য সেবার জাতীয় নাগরিকপঞ্জি বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি) বাস্তবায়নের বিষয়টি সামনে এনেছিল ক্ষমতাসীন দল। নির্বাচনী প্রচারণায় বিজেপি বলেছিল, এনআরসি প্রক্রিয়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উত্তর-পূর্ব ভারতে এগিয়ে নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য অংশেও বাস্তবায়িত হবে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us