বিশ্বের আলোচিত এবং ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্প্রতি তিনি পঞ্চমবারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। গত মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে পুতিন যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহাল থাকবেন, সেটা নিশ্চিতই ছিল। এ কারণে পুনরায় তাঁর নির্বাচিত হওয়া নিয়ে নয়, বরং তিনি কত শতাংশ ভোট পান, সেটাই ছিল দেখার বিষয়। নির্বাচনের আগে পূর্বানুমান করা হয়েছিল, তিনি ৮০ শতাংশ ভোট পাবেন। কিন্তু ভোট গণনার পর দেখা গেল, তিনি পেয়েছেন ৮৭ শতাংশ ভোট!
নির্বাচনে পুতিনের এই ‘সাফল্য’ নিয়ে অনেকেই ঠাট্টা-তামাশা করেন। এর যুক্তিসংগত কারণও আছে। সমালোচকদের মতে, রাশিয়ার নির্বাচনে কারচুপি বা জালিয়াতির বিষয়টি খুব স্পষ্ট। এ ছাড়া শক্ত প্রার্থীদের নির্বাচনের দাঁড়াতে না দেওয়াসহ বিরোধীদের কঠোরহস্তে দমন, এমনকি সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে পুতিনের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা এই রুশ নেতাই এখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পুতিনের রোমাঞ্চকর কর্মজীবন, রাজনীতিতে প্রবেশ এবং ক্ষমতার শীর্ষে চলে আসার ঘটনাগুলো খুবই কৌতূহলোদ্দীপক। কখনো কখনো তাঁর সিদ্ধান্ত বা অবস্থান আন্তর্জাতিক রাজনীতি, এমনকি যুদ্ধের মোড় পর্যন্ত ঘুরিয়ে দিয়েছে। রাশিয়া ও রাশিয়ার বাইরে তাঁর যেমন বহু সমর্থক আছেন, তেমনি রয়েছেন অনেক সমালোচকও। পুতিন কি একজন নায়ক, না স্বৈরশাসক, সেটা বুঝতে হলে তাঁর কর্মকাণ্ড ও জাতীয়-আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি কী ভূমিকা নিয়েছেন, সেগুলো বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি ছিলেন কেজিবির লোক
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার সাত বছর পর ১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লেনিনগ্রাদে (সাবেক সেন্ট পিটার্সবার্গে) জন্ম পুতিনের। তাঁর বাবা স্পিরিডোনোভিচ পুতিন, মা মারিয়া ইভানোভানা পুতিনা। এই দম্পতির তিন ছেলের মধ্যে পুতিন সবার ছোট।
দরিদ্র পরিবারের সন্তান পুতিন বেড়ে ওঠেন লেনিনগ্রাদে। তিনি লেলিনগ্রাদ স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে আইনশাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯৭৫ সালে যোগ দেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে। প্রায় ১৫ বছর তিনি এই গোয়েন্দা সংস্থার বৈদেশিক শাখায় কাজ করেন। জার্মান ভাষায় ভালো দখল থাকায় ১৯৮৫ সালে তাঁকে জার্মানির ড্রেসডেনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯০ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হয়ে পুতিন কেজিবির চাকরি থেকে অবসর নেন। এরপর দেশে ফিরে প্রোরেক্টর হিসেবে যোগ লেলিনগ্রাদ ইউনিভার্সিটিতে।