রোজার দিনগুলোতে আমরা বেশি পেঁয়াজ খাই। এটি প্রচলিত ধারণা। ধারণা বলছি এ কারণে যে গ্রামের মানুষ বেশি পেঁয়াজ খায় না বা খাওয়ার যে নাগরিক বা শহুরে সংস্কৃতি তা তাদের নেই। বলবেন, গ্রামেও তো শহরের প্যান্ট পরে সাধারণ যুবকরা। কিন্তু ক্ষেতে যারা কাজ করেন তারা কিন্তু লুঙ্গি পরেন। বিষয়টি তলিয়ে দেখার বোধ ও বুদ্ধি নাগরিককুলের নেই। তারা চলতি ফ্যাশনকেই মনে করে নগরের ও গ্রামের ফ্যাশন। যাদের পাছায় লুঙ্গি জোগারের আর্থিক শক্তি নেই তারা নাগরিক জীবনের চাকচিক্য নেবে কেমন করে?
তারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পোশাক পরেন। ঠিক একই রকম বিষয় খাবার গ্রহণের বেলায়ও। তাদের প্রধান পুষ্টির নাম ভাত। তার সঙ্গে শাক-সবজি আর ডাল থাকলেই তারা খুশি। মাছ থাকলে তারা মহাখুশি। তবে, কালেভদ্রে মাছ খায় তারা। বিল-ঝিলে মাছ ধরার যে উৎসব আমাদের ছেলেবেলায় ৫০/৬০/৭০ বছর আগে ছিল তা আজ কমে গেছে। কারণ বিলগুলো মজে গেছে আর বাড়িঘর উঠেছে ধানী জমিতে। চাষের জমিই তো কমেছে। ফলে শুরু হয়েছে মাছের চাষ। কম জায়গায় বেশি উৎপাদন, বেশি লাভ। মাছ যে চাষ করা যায়, এই বিদ্যা তো আমাদের ছেলেবেলায় ছিল না। এখন মাছ চাষ একটি বড় ব্যবসা।
আর পেঁয়াজের কথা কি বলবো? যা উৎপাদন হয়, তার একটি অংশ খায় আর বাকিটুকু বিক্রি করে। আর দশটা কৃষিপণ্যের মতোই কম-বেশি বিক্রি করে তারা সংসার খরচ চালায়। তারা কিন্তু নগরের মানুষের মতো কাড়ি কাড়ি পেঁয়াজ কেনেও না, খায়ও না। তার পরও সরকারি তরফে বলা হয়, জনপ্রতি পেঁয়াজের হিসাব। সেখানে দেখানো হয়। সেই হিসাবে দেশে পেঁয়াজ উৎপন্ন হয় ৩৬ লাখ টন। আর খেতে সারা বছরে খরচ হয় ২৫ লাখ টন।