প্রীতি উরাং ভালো নাচতে পারত। কিন্তু জীবন বিকশিত হতে দিল না দারিদ্র্য। আর তার মৃত্যু প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল ‘বড় মানুষের’ বিবেচনাবোধকে, কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতাকে।
মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে কমলগঞ্জ উপজেলার মিরতিংগা চা বাগানের ভেতর এক ছোট টিলার উপর প্রীতিদের বাড়ি। তার মৃত্যুর প্রায় এক মাস পরও সেখানে শূন্যতা, হাহাকার ও শোকের ছায়া।
একটিমাত্র কক্ষের মেঝেতেই পরিবারের সবার থাকার ব্যবস্থা। প্রীতির বাবা লোকেশ উরাং আর মা নমিতা উরাং অস্থায়ী চা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। স্থায়ী চা শ্রমিকরা রেশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড পেলেও সেসব সুবিধা তাদের নেই।
তাদের আরো একটি ছেলে ও মেয়ে আছে। তিন সন্তানের খাওয়া পরা নিশ্চিত করার কঠিন বাস্তবতায় প্রীতিকে ঢাকায় এক ‘বড়’ সাংবাদিকের বাসায় কাজে পাঠানোর প্রস্তাব এলে দ্বিতীয়বার ভাবেননি লোকেশ-নমিতা।
তারা চেয়েছিলেন, মেয়ে কাজ করে অর্থনৈতিকভাবে খুব লাভবান না হলেও অন্তত বড় হলে বিয়েটা যেন অর্থাভাবে না আটকে যায়। কিন্তু প্রীতি সব কিছুর ঊর্ধ্বে চলে গেছে। তার সঙ্গে কী হয়েছে, কেন সে নয় তলা ভবন থেকে ঝুলে পড়েছিল, সেসব প্রশ্নের জবাব আপাতত পুলিশের তদন্ত আর আদালতের বিবেচনার বিষয়।
এই ঘটনায় প্রীতির বাবা একটি মামলা করেছেন, সেই মামলায় অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। তাতে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার আসামি, তারা এখন কারাগারে বন্দি।