টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাস যে আগের তুলনায় বেড়েছে, তা টের পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ঘটনা থেকেই। গত সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেওয়া বিএনপিসহ তার মিত্র দলগুলো নির্বাচন নিয়ে নানা সমালোচনামূলক বক্তব্য দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন অব্যাহত রাখার কথা বললেও সেগুলো খুব আমলে নিচ্ছে না সরকার। আন্দোলন করে সরকার পতনের সক্ষমতা বিএনপির নেই। বিএনপির গর্জনের ক্ষমতা আছে, বর্ষণের ক্ষমতা নেই। দেশের ভেতরে-বাইরে সরকারের সামনে বড় কোনো চ্যালেঞ্জ না থাকলেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ে চাপে আছে সরকার। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের মনোযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো সাফল্য নেই।
নতুনভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জার্মান সফর শেষে দেশে ফিরে ২৩ ফেব্রুয়ারি গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার বক্তব্যে আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেছেন, জার্মানি সফরে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো উদ্বেগ নেই, মন্তব্য নেই, প্রশ্নও নেই। তারা নিজেরাই জানত নির্বাচনে আমি জিতে আসব। যারা আমাকে চায়নি, তাদের মাধ্যমেই কথা ওঠে, প্রশ্ন ওঠে।’
পাকিস্তানের নির্বাচনের ফলাফলের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে ১০-১২ দিন লাগল, সেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু। আর বাংলাদেশে এত সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল আসল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যে দেশ ফলাফল দিল, সেটা অবাধ, সুষ্ঠু না?
শেখ হাসিনা বিশ্ব মোড়লদের দুমুখো নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, ফিলিস্তিন ও ইউক্রেন নিয়ে বিশ্ব মোড়লেরা দুমুখো নীতি পালন করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধের ভুক্তভোগী আমরা। আমাদের বিশ্ব মোড়লেরা দুমুখো নীতিতে বিশ্বাস করে। ফিলিস্তিনের সমস্ত জমি দখল করে রেখেছে, ওটা ইনভেশন না। কিন্তু ইউক্রেনেরটা ইনভেশন। এই দুমুখো নীতি কেন হবে? সেটা আমার প্রশ্ন ছিল। আমি বলেছি। অনেকেই সাহস করে বলবে না।’
রাজনীতিতে ‘সাহস’ একটি বড় বিষয়। এটা বঙ্গবন্ধুর ছিল। শেখ হাসিনাও সব সময়ই সাহসের পরিচয় দিয়ে চলেছেন। তাই তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দুর্বল।