মিয়ানমারের চলমান ‘সিভিল ওয়ার’ ও বাংলাদেশ

বণিক বার্তা ড. রাহমান নাসির উদ্দিন প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:২৬

মিয়ানমারের রাখাইনে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি ও দেশটির সামরিক বাহিনীর মধ্যে যে তুমুল লড়াই চলছে তা নিয়ে মোটামুটি বাংলাদেশের মিডিয়া উত্তেজিত! মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ কী? মিয়ানমারের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ কী? রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ কী? এ অঞ্চলের আঞ্চলিক নিরাপত্তা কতটা হুমকির মুখে পড়বে? মিয়ানমারে যখন সিভিল ওয়ার চলছে, তখন বাংলাদেশের করণীয় কী? নানা বিষয় নিয়ে চলছে বহুমুখী বিচার-বিশ্লেষণ। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে মিয়ানমারের ‘আপ-টু-ডেট’ অবস্থা বাংলাদেশের ইলেকট্রনিকস ও প্রিন্ট মিডিয়া প্রায় প্রতিযোগিতা দিয়ে প্রকাশ ও প্রচারের চেষ্টা করছে। পেশাদারত্বের জায়গা থেকেও সেটা প্রশংসনীয়। তবে বাংলাদেশের মানুষ যে কেবল মিডিয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যা ঘটছে সে সম্পর্কে অবহিত হচ্ছে, শুধু তা-ই নয়, বরং সীমান্তবর্তী এলাকায় বিভিন্ন সময় ওই লড়াইয়ের নগদ ফল হিসেবে যে মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে এসে পড়ছে, তাতেই বোঝা যায় সেখানে তীব্র লড়াই চলছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে যে তুমুল লড়াই হচ্ছে তার প্রভাব আসলে কীভাবে বা কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলাদেশে পড়ছে তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। এ কথা অনস্বীকার্য যে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে রাখাইন রাজ্যের এ লড়াইয়ে বাংলাদেশে বহুমাতৃক অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তাজনিত প্রভাব পড়ছে। আজকের এ নিবন্ধে আরাকানের চলমান লড়াইয়ে বাংলাদেশে কী ধরনের প্রভাব পড়ছে, সে বিষয়ে সামান্য আলোকপাতের চেষ্টা করা হয়েছে।


রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর যে লড়াই চলছে তার কারণে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক এবং অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে পড়ছে। অক্টোবরের ২৭ তারিখ থেকে ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু হলেও ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাখাইনে এ লড়াই এত তীব্রতা ধারণ করেছে যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার অনেক মানুষকে নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে। লড়াইয়ে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে এসে পড়তে শুরু করলে এ আতঙ্ক অধিকতর তীব্রতা পায়। যখন এই মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশে দুজন মানুষ মারা যায়, তখন সীমান্তবর্তী মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ফেলে দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। ফলে সীমান্তবর্তী মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও জীবিকার যে সংস্থান এবং ব্যবস্থা, সেটা চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী মানুষের জীবন অর্থনৈতিকভাবে রীতিমতো স্থবির হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী সীমান্তবর্তী অঞ্চলের মানুষ তাদের ফসলের জমি দু-তিন সপ্তাহ ধরে ফেলে রাখার কারণে সেখানে নানা ধরনের আগাছা জন্ম নিয়েছে এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।


এছাড়া রাখাইনে চলমান লড়াইয়ের কারণে তীব্র গোলাগুলির শব্দে সীমান্তবর্তী এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সীমান্তবর্তী এলাকার শিক্ষা ব্যবস্থায়ও একটা বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। আমরা জানি ঘুনধুম এবং তমরু সীমান্ত এলাকার প্রাইমারি স্কুলগুলো অনেক দিন থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান আতঙ্কের কারণে উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। চলমান এসএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত একটি কেন্দ্র বাতিল করে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায়ও রাখাইনের লড়াইয়ের একটা বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।


সীমান্তবর্তী এলাকায় এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা এবং চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করায় পর্যটন শিল্প রীতিমতো হুমকির মধ্যে পড়েছে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে সেন্ট মার্টিন বাংলাদেশের একটি অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠলেও রাখাইনে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলার কারণে এ বছর সেন্ট মার্টিনে পর্যটক যাওয়া রীতিমতো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সেন্ট মার্টিন কেন্দ্র করে যেসব মানুষের জীবন-জীবিকা ও অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা ছিল, ভরা মৌসুমেও সেটা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা একটি চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ঘটনা প্রবাহ

ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us