একসময় বাংলাদেশ মানে মনে করা হতো অভাব-অনটন, বন্যাকবলিত এক দুস্থ দেশ। সেই অবস্থা এখন আর নেই। বিদেশের মাটিতে নানা কারণে দেশের প্রশংসা শুনি। নিজের চোখে দেখি নানাভাবে উদ্ভাসিত দেশের চেহারা। ঠিক একইভাবে আরও চেহারা বদলে গেছে, বদলে গেছে অনেক কিছু। আমরা যৌবনে ভাবতাম খোলামেলা সমাজ মানে বিদেশ; সেখানে কাছার-কাপড় খুলতে সময় লাগে না; এরা অনেক বিয়ে করে, বহুগামী হয়। আসলে কি তাই?
এটা মানি, পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে জীবন অবাধ এবং মানুষ স্বাধীন। কিন্তু এই স্বাধীনতার পায়ে বেড়িও আছে। অধিকাংশ মানুষ একগামী। একক পরিবারে থাকেন। এমন মনে করার কোনো কারণ নেই—চাইলেই যা কিছু করা সম্ভব। মূলত আমাদের সমাজেই এখন যৌনতা অধিক। দেশে গিয়ে মনে হয়েছে মাদক, টাকা আর যৌনতার ছড়াছড়ি। ওই যে বললাম সময় বদলেছে, ঢাকা-চট্টগ্রামে যেসব মদ বিক্রি হয় তার নাম শুনলেও দামের ভয়ে আঁতকে উঠবেন সাদা মানুষেরা। যে কথা বলছিলাম, সময়ে পৃথিবীর দরজা খুলে যাওয়ায় বাংলাদেশিরা হাতে যেন স্বর্গ পেয়ে গেছে। একদিকে বেহেশতের জন্য মরিয়া, অন্যদিকে সমাজে চলছে বেলাল্লাপনা।
আসুন, বইমেলা ঘুরে আসি। লেখক বড়, লেখক মাঝারি, লেখক সবাইকে ফেল মারিয়ে ভাইরাল হয়ে গেছেন তিশা-মুশতাক, ডা. সাবরিনার মতো কিছু মানুষ। কেন তাঁরাই পারলেন? যে জনবহুল সমাজে লাখ লাখ মানুষ চেষ্টা করেও কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে না, সে দেশে তাঁরা রাতারাতি সেলিব্রেটি! কী এর কারণ? আপনি, আমি দেখছি তারা অসম বয়সী দম্পতি বলে এই জমজমাট প্রচারণা।
আসলে কি তাই? তাঁরা যদি শুধু বিয়ে করার কারণে দেশ মাতাতে পারতেন তাহলে আমাদের আসল সেলিব্রেটিদের অনেকেই তা পারতেন। তাঁদেরও অসম বিবাহ ছিল। মুখরোচক ঘটনা ছিল। তখন মানুষ হয় এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিত, নয়তো মুখ ফিরিয়ে নিত। এখন সবাই কৌতূহলী। কিসের কৌতূহল?