কী কাটবে আর কোনটা ছাঁটবে

দেশ রূপান্তর রাজেকুজ্জামান রতন প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৫

জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে যদি আয় না বাড়ে তখন সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানে মানুষ ভাবে, কেনাকাটায় কিছু কাটছাঁট করতে হবে। কিন্তু কোনটা কাটবে আর কোনটা ছাঁটবে তা নিয়ে ভাবনায় পড়ে যায় সীমিত আয়ের মানুষেরা। দামের ওঠানামার সঙ্গে সাধারণভাবেই বলা হয়, চাহিদা ও জোগানের সম্পর্ক আছে। চাহিদা বেশি, জোগান কম তাহলে দাম বাড়বে আর জোগান বেশি, চাহিদা কম তাহলে দাম কমবে এটা তো পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হয়। কিন্তু চাহিদা আছে, জোগানও আছে অথচ দাম বাড়ছেই ক্রমাগত, তখন কী হবে? যদি পাল্লা দিয়ে আয় বাড়ে তাহলে সমস্যা নেই কিন্তু আয় না বাড়লেই নানা সমস্যা। কপালে পড়তে থাকে দুশ্চিন্তার ভাঁজ, চড়তে থাকে মেজাজের পারদ। সমস্যা হলো মেজাজ দেখাবে কার ওপর? যারা দাম বাড়ায় তাদের ক্ষমতা বেশি আর যারা কিনে খায় তাদের ক্ষমতা না থাকার মতোই। ফলে সেই পুরনো পরামর্শ আয় বুঝে ব্যয় কর, খরচের কাটছাঁট কর। কিন্তু কিছু পণ্য ও সেবা আছে যেসবের দাম বাড়লেও তাদের প্রয়োজন কমানো কঠিন। যেমন চাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ভাড়া ইত্যাদি।


দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে না। তার কারণ তিনটি। প্রথমত, উৎপাদন ও পরিবহন খরচ কমাতে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ডিজেলের দাম কমানো দরকার। সরকার সেটি করবে না। দ্বিতীয়ত, আমদানি বাড়িয়ে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ানো দরকার; কিন্তু মার্কিন ডলারের সংকটের কারণে আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা সহজে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে পারছেন না। তৃতীয়ত, কিছু কিছু পণ্যে উচ্চহারে শুল্ক-কর রয়েছে। সেখানেও ছাড় দেওয়া সরকারের পক্ষে সহজ নয়। কারণ, সরকার ইতিমধ্যেই রাজস্ব ঘাটতিতে রয়েছে। ফলে জনগণকেই মূল্যবৃদ্ধির বোঝা বহন করতে হবে।  


২০২৪ সালের শুরু থেকেই কিছু কিছু পণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। টিসিবির হিসাবে ঢাকা বাজারে ৮ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোটা চাল, প্যাকেটজাত আটা, ময়দা, মসুর ও মুগ ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ ৪ ধরনের মসলা ও ব্রয়লার মুরগি এই ১৩টি পণ্যের দাম বেড়েছে। কোনো ক্ষেত্রে ২ টাকা, কোনো ক্ষেত্রে ৫০ টাকা। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব বলছে, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি ঢাকার বাজারে চিনির কেজিপ্রতি দর ছিল ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা। এখন যা ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। শুধু চিনি নয়; চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, মসলাজাতীয় পণ্য, দুধ, ডিম, মাংস, সাবান, টুথপেস্ট প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি উঠেছে ১০ শতাংশের কাছাকাছিতে। এই হিসাব করা হয় ৭২২টি পণ্যের ওপর ভিত্তি করে, যদি সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য প্রধান ৩৭ থেকে ৪০টি পণ্যের ওপর ভিত্তি করে হিসাব করা হতো তাহলে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে দাঁড়াবে নিশ্চয়ই। যে কারণেই নিম্নবিত্তের কষ্ট আর মধ্যবিত্তের হাঁসফাঁস বেড়েছে। সাধারণ মানুষ কেমন আছেন জানতে চাইলে বলেন, ভালো আছি কিন্তু এই কথাটার মধ্যে মিশে থাকছে প্রয়োজনীয় মিথ্যা এবং অন্যের কাছে ছোট হয়ে যাওয়ার ভয়।   


নতুনরূপে আসা পুরনো সরকার বিশেষ কোনো উদ্যোগ না নিলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে না বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। কেউ কেউ আবার সরকারের অতীত কাজের মূল্যায়ন করে বলেন, এই সরকারের পক্ষে দাম কমানো কখনোই সম্ভব হবে না। সরকার চাইলে মূল্যবৃদ্ধি, অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব ছিল। আমদানি পণ্যের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ডলারের বিনিময় হার একটা বিষয়, কিন্তু ডলারের মূল্যবৃদ্ধির চেয়েও দেশের বাজারে দাম কেন বেশি বেড়েছে এর কোনো ব্যাখ্যা নেই।  এর ফলে অতিরিক্ত দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা করার সুযোগ পাচ্ছেন বড় ব্যবসায়ীরা। গম, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্যের ক্ষেত্রে এটা হচ্ছে। দেশে মূল্যস্ফীতি বেশি, রিজার্ভ সংকট, ডলার সংকট চলছে। এর অজুহাতে কিছু পণ্যের বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের মানুষ তার সুফল তেমন একটা পাচ্ছে না।   

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us