খবরটি বেশ ফলাও করেই এসেছে সংবাদমাধ্যমে। প্রতিবেদন হয়েছে, আলোচনাও হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু কি হচ্ছে বা হবে? কুষ্টিয়ার খাজানগরে দেশের বৃহত্তম চালের মোকামে অভিযান চালিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। অবৈধ মজুতের অভিযোগে গুদাম সিলগালাসহ জরিমানা করা হয়েছে মোকামের মালিককে।
খোদ খাদ্যমন্ত্রী যখন নিজে অভিযানে নামেন, তখন তার গুরুত্ব বাড়ে। কিন্তু চালের বাজারে এর প্রভাব কী? দাম কমেছে? না কমেনি। জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে চালের বাজার সেই যে অস্থির হতে শুরু করে, সেটায় কোনো ভাটা পড়েনি অভিযানের পরও। তাৎক্ষণিকভাবে কয়েক টাকা কমে, সেটা আবার বাড়তে শুরু করে। অভিযান শুধু নয়, সরকারের পক্ষ থেকে জেল-জুলুমের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর কোনো ইতিবাচক প্রভাব নেই বাজারে। এভাবে জিনিসপত্রের দাম কমানো যায় না।
শুধু চাল নয়, প্রায় সব জিনিসেরই দাম বাড়তি, যেটা সরকার নিজেও অস্বীকার করছে না। গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কথা তাঁরা আমলে নিচ্ছেন না, তাঁদের ভাবনা এখন দ্রব্যমূল্য নিয়ে। সরকারপ্রধানও বেশি গুরুত্ব দিয়ে কথা বলছেন। নতুন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী তো দৃশ্যমানই রেখেছেন নিজের প্রচেষ্টা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতির গড় ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে একটু কমেছে। ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ফলে স্বস্তি পাওয়ার কোনো জায়গা নেই। সবকিছুর দরই বেশ চড়া। পাইকারি স্তরে বাড়ায় খুচরা বাজারেও জিনিসের দাম বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ খাদ্যপণ্য নিয়ে।
বাজারে চাহিদা এবং জোগানের যে সম্পর্ক, সেটাও খাটছে না বাংলাদেশের জন্য। বাজারে সরবরাহ ঘাটতি নেই, অথচ জিনিসপত্রের দাম লাফিয়ে বাড়ছে। বাজারে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, আলু, শীতকালীন শাকসবজি থেকে শুরু করে এমন কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নেই, যার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না। দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ ও লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিই এখন এক নম্বর জাতীয় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে।