প্রবাসী আয়ে ফিলিপাইন যখন বাংলাদেশ থেকে এগিয়ে

আজকের পত্রিকা আবু তাহের খান প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৯

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী কর্তৃক প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার দেশে পাঠানোর সুবাদে বাংলাদেশের পক্ষে এই অর্জন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। এটি তো এখন প্রায় সবারই জানা, প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতের পর বাংলাদেশের বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনকারী খাত।


আর তৈরি পোশাক খাতের বস্ত্র আমদানি ব্যয় বাদ দিয়ে নিট রপ্তানির পরিমাণ হিসাব করলে প্রকৃতপক্ষে প্রবাসী আয়ই হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের বৃহত্তম উৎস। সুতরাং এই খাতের বিস্তৃততর অবদান দেখে আনন্দিত হওয়ার যথেষ্টই কারণ রয়েছে। কিন্তু এ-সংক্রান্ত সামগ্রিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও তুলনামূলক তথ্য সামনে আনলে সেই আনন্দের অনেকটাই ফিকে হয়ে যায় বৈকি!


সে তথ্যই তাহলে এখানে সামনে আনা যাক। বছরে ৪ হাজার কোটি ডলার দেশে পাঠিয়ে প্রবাসী আয়ে ফিলিপাইনের অবস্থান চতুর্থ এবং এই পরিমাণ আয় দেশে পাঠাচ্ছেন মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি মিলে। এর পাশাপাশি ২ হাজার ৩০০ কোটি ডলার আয় করে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে সপ্তম, যা মোট ১ কোটি ৫০ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির আয়ের ফসল। এখানে লক্ষণীয় হচ্ছে, দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশি মিলে বছরে যে পরিমাণ আয় করছেন, মাত্র ২০ লাখ ফিলিপাইনি (বাংলাদেশের এক-অষ্টমাংশ) মিলে আয় করছেন তার প্রায় দ্বিগুণ।


প্রশ্ন হচ্ছে, একই সময়ে এবং মোটামুটি একই দেশগুলোতে কাজ করে একজন ফিলিপাইনি কর্মী যখন একজন বাংলাদেশি কর্মীর তুলনায় ১৩ গুণ বেশি আয় করেন, তখন এর বিপরীতে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীর বার্ষিক উপার্জনের পরিমাণটি কেমন জবুথবু দেখায় নাকি? কিন্তু কেন এই বিশাল তফাত? জবাবটি খুবই স্পষ্ট—যিনি যাঁর দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং বেতন-ভাতাদিও সে অনুযায়ীই পাচ্ছেন।


আর এরই নিট ফলাফল হচ্ছে এটি এবং এই অবস্থা প্রায় ৫০ বছর ধরেই চলছে। বৈদেশিক মুদ্রার উপার্জন বাড়ানোর লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য সরকার এত এত প্রণোদনা, নগদ সহায়তা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে, অথচ বিদেশে কর্মী পাঠানোর আগে তাঁকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে তোলার ব্যাপারে বলতে গেলে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগই নেই। এ ব্যাপারে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যত ব্যাখ্যাই দিক না কেন, মোদ্দাকথা হলো, কাজটি প্রয়োজন অনুযায়ী হচ্ছে না; অর্থাৎ যেসব কাজ করে এবং যে পর্যায়ের দক্ষতা ও যোগ্যতার কারণে একজন ফিলিপাইনি প্রবাসী কর্মী একজন বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীর চেয়ে ১৩ গুণ বেশি উপার্জন করছেন, সেই সব ক্ষেত্র বাছাই করে, সেই স্তরের দক্ষতা ও যোগ্যতাটুকু বাংলাদেশ তার কর্মীদের আজও এনে দিতে পারেনি।


এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হয়তো বলবে, আমাদের কর্মীরা কষ্ট করে এসব শিখতে চান না। এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। জীবিকা তথা পেটের তাগিদ এমনই নিরন্তর যে এ জন্য মানুষ যেকোনো ত্যাগ স্বীকারেও কুণ্ঠা বোধ করে না। ফলে কাজের জন্য বিদেশে যেতে চাওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে নির্দিষ্ট ট্রেডে ও মানে দক্ষতা অর্জনকে যদি বাধ্যতামূলক করা যায়, তাহলে জীবিকার প্রয়োজনে এখন তিনি যেমন ঘটিবাটি বিক্রি করে হলেও বাইরে যেতে চান, তখন একই প্রয়োজনে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়াতেও বিন্দুমাত্র অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us