নবীকুল শিরোমণি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সমগ্র জীবন অতিবাহিত হয়েছে মানুষের মুক্তি সাধন, ঐক্য বিধান ও সুসভ্য করে গড়ে তোলার জন্য। আল্লাহর নবীগণের মধ্যে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যার জীবনের প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি ঘটনা ইতিহাসের অন্তর্গত। সারা জাহান যখন জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত তখন হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে আল্লাহপাক প্রেরণ করেছেন মানুষের ত্রাণকর্তা হিসেবে।
আর এ জন্যই আল্লাহতাআলা তাকে বলেছেন- ‘রহমতুল্লিল আলামিন’ অর্থাৎ সারা বিশ্বের রহমত স্বরূপ। জন দরদী মহানবি (সা.) মানুষকে সকল প্রকার পঙ্কিলতা, অনিয়ম, অনাচার, পাপাচার ও অন্ধকারের বেড়াজাল হতে মুক্ত করতে আজীবন চেষ্টা চালিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন।
অভিষ্ট লক্ষে পৌঁছা না পর্যন্ত তিনি ক্ষান্ত হন নাই। নিজে বহু কষ্ট করেছেন, নানা বাধা বিঘ্নের সম্মুখীন হয়েছেন, নির্যাতন সহ্য করেছেন, লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়েছেন, জীবনের উপরে বার বার হুমকি এসেছে তবুও তিনি পিছিয়ে যান নি। একাধারে বিরামহীন চেষ্টা ও অক্লান্ত পরিশ্রম দ্বারা তিনি জয়যুক্ত হয়েছেন। এভাবে সেকালের ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহতাআলা এই ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘আর আমি তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যই সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে পাঠিয়েছি। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না’ (সুরা সাবা, আয়াত: ২৮)।
বিশ্বনবী ও শ্রেষ্ঠনবী হজরত খাতামান নবীঈন (সা.)-কে আল্লাহতাআলা কেবল মক্কা শহর বা সেই দেশ বা কেবল সেই যুগের লোকদের জন্যই আবির্ভূত করেন নি। তিনি (সা.) কিয়ামত পর্যন্ত সারা দুনিয়ার জন্য প্রেরিত হয়েছেন। কিন্তু তার (সা.) সমকালীন অনেক দেশবাসী তার মর্যাদা ও কদর বুঝে নাই। তাদের কাছে যে কত বড় মহান মহিমান্বিত ব্যক্তিকে পাঠানো হয়েছে এ অনুভূতি এদের ছিল না। তার (সা.) মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তির বাতাস প্রবাহিত হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে বার বার এই ঘোষণা করা হয়েছে যে, মহানবি (সা.)-কে পৃথিবীর বিলুপ্তি সময় পর্যন্ত সর্বমানবের জন্য ‘রাসুল’ রূপে পাঠানো হয়েছে। আর ইসলামের বাণীই শাশ্বত বাণী, যা সর্বমানবের জন্য এসেছে এবং কুরআনই আল্লাহর সর্বশেষ ধর্মগ্রন্থ যাতে সর্বকালের সর্বমানবের জন্য হেদায়েত রয়েছে।