পাহাড়ে বম সম্প্রদায়ের পাড়া আর ঘরগুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যেত; বন-জঙ্গলের মধ্যেও প্রতিটি বাড়ির পরিচ্ছন্ন উঠোনজুড়ে থাকত সারি সারি ফুলের গাছ, থোকা থোকা ফুল।
কিন্তু গত দুই বছরে সরল-সহজ আর পরিপাটি সেই জীবন উবে গেছে বমদের। অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তার অভাব আর শঙ্কার মধ্যে এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছে এই নৃগোষ্ঠীর জীবন।
কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা, ইসলামী জঙ্গিদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আর ওই দুই দলকে দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ঘটনাপ্রবাহে পাড়া ছেড়ে পালিয়েছে বহু বম পরিবার। তাদের সংখ্যা হাজারের বেশি।
বাস্তুচ্যুত সেই বমদের বাড়িঘর এখন ফুলের গাছের বদলে ভরে গেছে আগাছায়। যত্নের অভাবে ভেঙে পড়া বাঁশ-কাঠের ঘর এখন সাপের বসত। অনাবাদী রয়ে গেছে জুমের জমি।
পাকিস্তান আমলে, এমনকি বাংলাদেশ পর্বেও পাহাড়িদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকেন্দ্রিক নানা রাজনৈতিক উত্থান-পতনের ঢেউ অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর মত বমদের জীবনেও এসেছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা নিজেদের জীবনধারা, মূল্যবোধ আর ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন এতদিন।
কিন্তু ২০২২ সাল থেকে যা ঘটছে, তাতে উভয় সংকটে পড়ে গেছেন বমরা। একদিকে সন্তানদের রক্ষা, অন্যদিকে পাহাড়ে শান্তি-স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এমন বিপর্যয় তাদের জীবনে আর কখনও আসেনি।