বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরিয়া সাম্প্রদায়িক উস্কানি এই দেশে নূতন নহে। প্রশাসনের পক্ষ হইতে নিরাপত্তা লইয়া কঠোরতা ও নজরদারি সত্ত্বেও প্রায় প্রতি বৎসরই প্রতিমা ভাঙচুর, এমনকি হামলা ও ভাঙচুরের অঘটনও বিরল নহে। কিন্তু এই বৎসর মহালয়ার পূর্বেই কুমিল্লা আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন যেইভাবে অযাচিতভাবে দুর্গোৎসব সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করিয়াছেন, উহা অভূতপূর্ব। শুধু তাহাই নহে, তাঁহার অনুসারীরা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে হামলাও করিয়াছে। স্বীয় ধর্মবিশ্বাস লইয়া কথা বলিবার অধিকার সংসদ সদস্যের বিলক্ষণ রহিয়াছে। কিন্তু অপরের ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান কিংবা পালনের রীতি লইয়া তিনি যেইভাবে ‘উপদেশ’ দিয়াছেন, উহা যেই কোনো বিবেচনাতেই অগ্রহণযোগ্য।
আমরা দেখিয়া থাকি, ঐতিহাসিকভাবেই এই দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণের সহিত বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্পর্ক অপর যেই কোনো রাজনৈতিক দলের তুলনায় ঘনিষ্ঠ। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেহ আক্রান্ত হইলে দলটির নেতাকর্মীগণকেই আমরা সাধারণত সোচ্চার হইতে দেখি। কিন্তু সম্প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিভূ রানা দাশগুপ্ত বারংবার সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও হামলার সহিত স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ কর্মীদের দায় নিয়া কথা তুলিয়াছেন। তাঁহার অভিযোগ আমলে না নিয়া উপায় নাই।