রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার পূরণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ নতুন নয়। সে খবরে আরও যুক্ত হলো জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসের মুখ্য মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিকের দেওয়া বিবৃতি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ডুজারিক বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেছেন, দাতাদের তহবিল কমানোর কারণে সংস্থাটি কক্সবাজারের পুরো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা কমাতে বাধ্য হয়েছে।
তহবিলের ঘাটতির কারণে রোহিঙ্গাদের সম্পূর্ণ রেশন গত মার্চ মাসে ১২ ডলার থেকে কমিয়ে মাসে ১০ ডলার করা হয়েছে। পরে গত জুনে তা আরও কমিয়ে ৮ ডলার করা হয়েছে। এ ছাড়া বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ রেশন দিতে ডব্লিউএফপির আরও ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার প্রয়োজন। সাধারণ বিবেচনায়, যদি এই অর্থের সংস্থান করা সম্ভবপর না হয় এবং ক্রমান্বয়ে বাজেটকে হ্রাস করা হয় তাহলে রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার সূচকের (যেমন– খাদ্য, বস্ত্র ইত্যাদি) প্রতিটি বিষয়ের সংকট ঘনীভূত হবে। সবচেয়ে যে বিষয়টি উদ্বেগের কারণ হতে পারে তা হলো খাদ্য সংকট। এই খাদ্য সংকট মোকাবিলায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্ভর করতে হচ্ছে দাতাদের ওপর।
রোহিঙ্গাদের সংকটের প্রভাব যে বাংলাদেশের ওপর পড়ছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্ধযুগ অতিবাহিত হলেও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত নেয়নি। এমনকি আন্তর্জাতিক মহল থেকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য কোনো চাপ এখনও দৃশ্যমান নয়। এই প্রত্যাবর্তনের নামে বরং নানা ধরনের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে কূটনৈতিক মঞ্চে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জোর তৎপরতার কারণে এখনও বিশ্ববাসী রোহিঙ্গাদের বিষয়টি ভুলে যায়নি। দীর্ঘদিন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়েছে একটি বাড়তি ব্যয়।