দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে এ ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের ২৫ শতাংশই খেলাপির খাতায় উঠেছে। গত ডিসেম্বর শেষেও এ ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার ২০ শতাশের নিচে ছিল। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর মূলধন কাঠামো আরো ভঙ্গুর হয়েছে। বেড়েছে ব্যাংকগুলোর সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতির পরিমাণও। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সম্পদের বিপরীতে আয় (আরওএ) এবং ইকুইটির বিপরীতে আয়ও (আরওই) নেতিবাচক (ঋণাত্মক) ধারায় চলে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে সরকার মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর দীনতার এ চিত্র উঠে এসেছে।
সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)—এ ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে এ ছয়টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭৪ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। এর মধ্যে এক জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা। ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের ৩২ দশমিক ৬৪ শতাংশই এখন খেলাপি। অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণও ১৬ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। সোনালী ব্যাংকের ১২ হাজার ৩৮২ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়ে গেছে। সরকারি খাতের সর্ববৃহৎ এ ব্যাংকটিতে খেলাপি ঋণের হার ১৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের হার ১৯ শতাংশের বেশি। লুণ্ঠনের শিকার হওয়া বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন ৮ হাজার ২৫ কোটি টাকা। এ ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের ৬২ দশমিক ৬৬ শতাংশই খেলাপি। বিডিবিএলের খেলাপি ঋণের হারও ৪৪ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে, যার পরিমাণ ৯৭১ কোটি টাকা।