মুদ্রাস্ফীতি ও মূল্যে টুপি

দেশ রূপান্তর বদরুল হাসান প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:১৪

দেশে মুদ্রাস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস চলছে। অথচ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে মূল্যস্ফীতি বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধ-পূর্ববর্তী পর্যায়ে ফিরে এসেছে। এমন কি শ্রীলঙ্কার মতো ভুঁইফোড় মুদ্রাস্ফীতির দেশেও বিগত আগস্ট মাসে এর সূচক ৪ শতাংশে নেমে আসে। আর আমাদের দেশে খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী ওই মাসে দেশের সার্বিক মুদ্রাস্ফীতি (৯.৯২ শতাংশ) প্রায় দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করে ফেলেছে, খাদ্যপণ্যের সূচক ইতিমধ্যেই ১২ শতাংশের ঘর অতিক্রম করেছে। এটা আবার শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে বেশি। সামনে জাতীয় নির্বাচন। ফলে এই পাগলা ঘোড়া নিয়ে সরকারও বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।


সাধারণ মূল্য স্তরের বৃদ্ধি এক জিনিস আর কারসাজি করে বিশেষ বিশেষ পণ্যের মূল্য বিস্ফোরণ ঘটানো আরেক জিনিস। দেশে এই উভয় প্রপঞ্চের উপর্যুপরি উপস্থিতি ও বিরামহীন ক্রিয়াশীলতা শুধু লক্ষ্যই করা যাচ্ছে না, বরং একটা আরেকটাকে উস্কে দিতে যেন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। আমদানি করা হোক বা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিতই হোক, নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো পণ্যই এখন আর এই দুষ্ট বাতাবরণের বাইরে নেই; ভোজ্যতেল, চিনি, আটা, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, ডিম, এমন কি আলুর উদ্বৃত্ত পণ্যেও চলছে এই ভোজবাজির খেলা। এতে নাকাল হচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষ। আর ফুলে-ফেঁপে কলাগাছ বনে যাচ্ছে ধনিক ও বণিক সম্প্রদায়; এই দুঃসময়েও দেশে বেড়ে চলেছে কোটিপতির সংখ্যা। মুদ্রাস্ফীতির প্রধান কাজই এটা, নিঃস্বদের সম্পদ শীর্ষদের পকেটে স্থানান্তর করা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্ভবত কিছু একটা করা দরকার এই চিন্তা থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর ডিম, পেঁয়াজ ও আলুর সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু এটা কতটুকু কার্যকর করা সম্ভব এবং দীর্ঘমেয়াদে এই ব্যবস্থা কতটুকু ফলপ্রসূ হবে, সেটা বিবেচনার দাবি রাখে।


সরকার এর আগেও মূল্য উল্লম্ফনের প্রেক্ষাপটে চিনি ও ভোজ্যতেলের সর্বোচ্চ বিক্রয় মূল্য বেঁধে দিয়েছিল। তাতে বাজার পরিস্থিতিতে তেমন কোনো ইতর-বিশেষ হয়নি। এই প্রেক্ষাপটে একটা কৌতুক স্মরণে আসছে। মানুষ সাধারণত যেখানে নিগৃহীত হয়, প্রথমে সেখানে তার মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রয়াসী হয়। এক রেলওয়ের খালাসি তার স্ত্রীর কাছে নিজের ক্ষমতা জাহির করতে বলে বসে, তুমি দাম না দিলে কী হবে, চাকরিতে আমার ক্ষমতা অসীম; যে রেলগাড়িতে বড় বড় সাহেব-সুবা চড়ে বেড়ান, সেই ট্রেন মুহূর্তের মধ্যে আমি থামিয়ে দিতে পারি। বউটার বেশ কৌতূহল হয় এই গোবেচারা স্বামীর এত ক্ষমতার কথা শুনে। সে পরীক্ষা প্রার্থনীয় হয়। খালাসি বউ নিয়ে গিয়ে রেলগাড়ি আসার সময় লাইনের ওপর লাল সালু টাঙিয়ে দেয়। গাড়ি যথারীতি থেমে যায়। গার্ড গাড়ি থেকে নেমে লাইনে কোনো কাজের নিশানা না দেখে খালাসির কাছে লাল সালু টাঙানোর হেতু জানতে চান। কোনো সদুত্তর না পাওয়ায় গার্ড খালাসিকে থাপ্পড় মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে ট্রেন নিয়ে চলে যান। বউটা তখন স্বামীকে বলে, ‘দেখলাম তোমার ক্ষমতা, গার্ড সাহেব তো তোমাকে থাপ্পড় মেরে মাটিতে ফেলে দিল।’ বেচারা খালাসি তখন বলে ওঠে, ‘আমার গাড়ি থামানোর ক্ষমতা আছে, আমি গাড়ি থামাইছি। গার্ড সাহেবের থাপ্পড় মারার ক্ষমতা আছে, তিনি আমারে থাপ্পড় মারছেন।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী মূল্য বেঁধে দিয়ে কাজ সমাপ্ত করছে। আর ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রি করে মুনাফা লুটেছেন। কাজেই প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষমতার মধ্যেই আছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us