১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর প্রথম পাতায় দ্রব্যমূল্য নিয়ে একটি স্কুপ নিউজ চোখে পড়ল। শিরোনাম ছিল ‘বিশ্ববাজার ও দেশের বাজারে দামের চিত্র’। দেখলাম বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের দামের চেয়ে বেশি। একটা উদাহরণ দিই। আন্তর্জাতিক বাজারে একটি ডিমের দাম ৫.৬১ টাকা। বাংলাদেশে এর দাম ১২.৫০ থেকে ১৩.২৫ টাকা, অর্থাৎ দ্বিগুণের বেশি। খবরটি নিয়ে এখনো সরকারি মহল থেকে কোনো প্রতিবাদ বা বিবৃতি আসেনি। সুতরাং ধরে নিতে পারি, প্রথম আলো যে তথ্য দিয়েছে, তা বানোয়াট নয়। প্রশ্ন হলো, মানুষ কী হালতে আছে?
নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। যাঁরা গতর খেটে খান, হালাল রুজির ওপর নির্ভরশীল, তাঁরা বেকায়দায় আছেন। দৈনন্দিন বাজারের ফর্দ কাটছাঁট করতে হচ্ছে। খাবার টেবিল থেকে অনেক কিছুই উধাও হয়ে যাচ্ছে।
আমরা মাংসের বদলে কাঁঠাল খাওয়ার পরামর্শ পেয়েছি। কাঁঠাল তো মৌসুমি ফল। অন্য সময় মাংসের বিকল্প কী হবে? ডিম সেদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেওয়ার পরামর্শও পাচ্ছি। সবার ঘরে কি ফ্রিজ আছে? তা ছাড়া সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে কয় দিন রাখা যায়? জানি না। সত্য হলো, মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে।
আমরা একটা গড় হিসাব করে বলি, দেশে দুর্ভিক্ষ আছে, নাকি নেই। কস্মিনকালেও সবাই দুর্ভিক্ষপীড়িত ছিল না। যার কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই, সে-ই দুর্ভিক্ষের শিকার হয়। গুদামে বা বাজারে খাবার থাকলেও দুর্ভিক্ষ হয়। এটা আমরা দেখেছি, শুনেছি। কিছুদিন আগে টিসিবির ট্রাকের পেছনে ক্রেতার লম্বা লাইন দেখে বোঝা গিয়েছিল, মানুষ অনেক অসুবিধায় আছে। যদিও এ নিয়ে কাউকে কাউকে ট্রল করতে দেখা গেছে। মানুষের অসহায় অবস্থা দেখে যাঁরা কৌতুক করেন, মানুষ তাঁদের মনে রাখে। কিছু করতে পারে না। কেবল অভিশাপ দেয়।