আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এখন আলোচনায়। প্রশ্ন উঠেছে, একসময়ের তুখোড় এই ছাত্রনেতা তাঁর পুরোনো দল আওয়ামী লীগে ফিরে যাচ্ছেন কি না। প্রশ্নটি উঠেছে ১ সেপ্টেম্বর ছাত্রলীগ আয়োজিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছাত্রসমাবেশের মঞ্চে তাঁর উপস্থিতির পর।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সুলতান মনসুর আওয়ামী লীগে ফিরছেন—এ ধরনের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে একটি পত্রিকাকে তিনি বলেছেন, ‘গত ৫৪ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করছি। এক সেকেন্ডের জন্যও সে আদর্শ থেকে সরিনি। সুতরাং নতুন করে আলোচনা হবে কেন?’ একজন মহান নেতার আদর্শের অনুসারীরা তাঁর আদর্শের ঝান্ডা উঁচিয়ে ধরে পথ চলবেন, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু জনপ্রত্যাশার সেই জায়গাটিতে অনেক সময় এমন বেমাক্কা ধাক্কা লাগে যে আমজনতার তা সামলে উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়।
সুলতান মনসুর ডাকসুর ভিপি হয়েছিলেন ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে। হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদকও। কিন্তু ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেনের সময় রাজনীতি থেকে নেত্রী শেখ হাসিনকে মাইনাস করার চক্রান্তের অন্যতম কুশীলব হয়ে ওঠেন তিনি। ফলে অবধারিত বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। দল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে দীর্ঘদিন ছিলেন একেবারে চুপচাপ। ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্ত হন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টে।
বিএনপির মার্কা ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মৌলভীবাজা-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য। তারপর বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নেন এমপি হিসেবে।
সুলতান মনসুরের হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের মঞ্চে আরোহণ তাই রাজনৈতিক মহলে ঔৎসুক্যের সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগের ঘরের ছেলে সুলতান মনসুর আবার ঘরে ফিরে যাচ্ছেন কি না। তা তিনি যেতেই পারেন। কেননা রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে কত নাটকই তো মঞ্চস্থ হয়। সুতরাং সুলতান মনসুর যদি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মাঝি হিসেবে আবির্ভূত হন, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।