আমাদের এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন সময়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনেক আন্দোলন-সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে। ত্যাগ-আত্মত্যাগের নজিরবিহীন দৃষ্টান্তও কম স্থাপিত হয়নি। কোনো আন্দোলনকেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। ওইসব ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন কোনোটি সফলতার মুখ দেখেছে, সেটা কিন্তু বলা যাবে না। তেভাগা, হাজং, নানকা, টংক, রায়পুরায়, ডুমুরিয়ার আধিয়ার ইত্যাদি কৃষক আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করলেও শাসকরা চরম কঠোর হস্তে দমন করার ফলে আন্দোলন সফলতার মুখ দেখেনি। ব্যতিক্রম ফুলবাড়ী উন্মুক্ত কয়লা উত্তোলনের এশিয়া এনার্জির বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের ভূমিরক্ষার আন্দোলনকে সফল বললে ভুল হবে না। নির্যাতন, হত্যা সংঘটিত করেও আন্দোলনকে দমন করা সম্ভব হয়নি। তীব্র আন্দোলনের মুখে বহুজাতিক এশিয়া এনার্জিকে ফুলবাড়ী ত্যাগ করতে হয়েছে। আমাদের শাসকরা দেশের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার অজস্র দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও ফুলবাড়ীর ক্ষেত্রে তারা সফল হতে পারেনি, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ত্যাগ-আত্মত্যাগের প্রবল আন্দোলন-সংগ্রামে। দেশে কৃষক আন্দোলন কম হয়নি। কিন্তু একটি কৃষক আন্দোলনেও কৃষকের দাবি আদায় সম্ভব হয়নি। রক্তপাতেও কৃষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
সাম্প্রতিক সময়ে ভোলায় আমাদের অনুসন্ধানীরা গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করলেও সেই গ্যাসক্ষেত্র রাশিয়াকে তুলে দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। বঙ্গোপসাগরের তেলক্ষেত্র মার্কিন মবিল কোম্পানিকে দেওয়ার বিষয়টিও সংবাদে এসেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশ ও দেশের সম্পদ জলাঞ্জলি দেওয়ার হীন কার্যকলাপ অবিরাম চলছে এবং এ ধরনের দেশ ও জনগণের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়ার ঘটনা নতুন নয়। সব সরকারের শাসনামলেই চলে এসেছে। ভারতকে একতরফা ট্রানজিট সুবিধার বিনিময় শূন্য। এ ছাড়া নানা ক্ষেত্রে সুবিধা প্রদানে কার্পণ্য করা হয়নি। অথচ আমাদের জাতীয় প্রাপ্তি কিছুই নেই।