সমাজ অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক শিক্ষার হার, নারীর ক্ষমতায়ন, চিকিত্সা ক্ষেত্রে উত্কর্ষ অর্জন এবং অবাধ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। নারীর ক্ষমতায়ন প্রকাশিত হয় নারীর রাজনীতিতে অংশগ্রহণ, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার, অবনমিত মাতৃমৃত্যু ও বাল্যবিবাহের হার দ্বারা। ধর্ম-সাম্প্রদায়িকতাহীন রাজনৈতিক পরিবেশে নারীর ক্ষমতায়ন দ্রুততর হয়। নারীর ক্ষমতায়নের সঙ্গে যুক্ত আছে দেশে প্রবৃদ্ধির হার কী হবে, সর্বজনীন মানবাধিকার কতটা গভীরতা পেল এবং পরিশীলিত মুক্তমনা প্রজন্ম তৈরিতে আমরা কতটা সফল হচ্ছি। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ কতটুকু এগিয়েছে, তা আমরা এই নিবন্ধে তথ্য-উপাত্তভিত্তিক বিশ্লেষণের প্রচেষ্টা নিয়েছি।
লন্ডনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজিনেস রিসার্স (সিইবিআর) প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রক্ষেপণ করে, যা ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগ টেবিল’ নামে পরিচিত। ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মূল্য ২০৩৭ সালে বাংলাদেশের জিডিপির আকার হবে ১৬২৮ বিলিয়ন ডলার (দেড় ট্রিলিয়নের বেশি), অর্থাত্ বাংলাদেশ ২০২২ সালের ৩৪তম অবস্থান থেকে ১৪ ধাপ এগিয়ে ২০৩৭ সালে ২০তম বৃহত্তম অর্থনীতি হবে। এই সিইবিআরের মতে, বাংলাদেশ ২০৩২ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলারের (১০৮১ বিলিয়ন ডলার) অর্থনীতি হতে যাচ্ছে। সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত ব্লুমবার্গ সংবাদ সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় তার সময়োচিত সংস্কার পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য। এমনকি এই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্যই আগামী নির্বাচনে তিনি চতুর্থ বারের মতো ক্ষমতায় আসতে পারেন বলে সংবাদ সংস্থাটি মন্তব্য করেছে। গত দশকে কোভিড-১৯-এর আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বে দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর মধ্যে একটি ছিল। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়ন সূচক যেমন—শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুমৃত্যুর হার, প্রত্যাশিত গড় আয়ুতে বাংলাদেশ প্রভূত সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশ দারিদ্র্য দূরীকরণে যে সফলতা দেখিয়েছে, তা বিশ্বের খুব কম দেশের পক্ষে সম্ভব হয়েছে।