বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রায় মহামারির পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ২০০০ সালে প্রথম দেখা দেওয়া ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ২০১৯ ও ২০২২ সালে ভয়াল রূপ ধারণ করেছিল। চলতি বছরে এসে এ রোগের উপসর্গ যেমন বদলেছে, তেমনি বেড়েছে রোগ ছড়ানোর তীব্রতা। ঢাকা, চট্টগ্রাম নগরীসহ অন্যান্য ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই রোগ ছড়াচ্ছে। ডেঙ্গু দ্রুত শনাক্ত করা এবং এর চিকিৎসা দেওয়ার জন্য দেশের অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র পূর্ব-প্রস্তুত নয়। এখন বলা হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব নাকি আরও বাড়বে।
বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিসসহ অন্যান মশার ঘনত্ব বাড়ার আশঙ্কাকে মার্কিন ধনকুবের ও সমাজসেবক বিল গেটসও গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেছেন সম্প্রতি। তিনি বলছেন, উষ্ণায়ন ঠেকানোর সংগ্রামে আমরা যেন জনস্বাস্থ্য রক্ষার বিষয়টি উপেক্ষা না করি।
এ ছাড়া ২০২০ সালে নেচার কমিউনেকশন পত্রিকায় প্রকাশিত এক অভিসন্দর্ভে কয়েকজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীও একটি ফেনোলজি মডেল ব্যবহার করে আলোকপাত করে বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বিষুবরেখাসংলগ্ন অঞ্চলে এডিস মশা ছড়ানোর হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়বে। তারা এও বলছেন, আগামী কয়েক দশকে ডেঙ্গু পরিবাহী এই মশা ইউরোপ, চীন ও উত্তর আমেরিকাতেও ছড়িয়ে যাবে। এই মডেল অনুসারে এডিস মশা ছড়ানোর ‘ইনভেশন ফ্রন্ট’ বা সীমারেখা বছরে ২ থেকে ৬ কিলোমিটার হারে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর বৈজ্ঞানিক কারণ হিসেবে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা এবং এর ফলে এডিস মশার জীবনচক্র সম্পাদনের হার বৃদ্ধিকে দায়ী করা হচ্ছে। উষ্ণায়নের সঙ্গে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়বে– এটা এখন স্বতঃসিদ্ধ। তাই এর প্রতিকারের ওপর জোর দেওয়া এখনই জরুরি।