সর্বশেষ তাঁকে ‘আমরা আমরাই’ ধারাবাহিক নাটকে দেখা গেছে। এ ছাড়া ‘স্বীকার’ নামে একটি টেলিভিশন শোতে দেখা যায় তাঁকে। সব মিলিয়ে খুবই কম কাজে দেখা যাচ্ছে অভিনয়শিল্পী মাজনুন মিজানকে। কেন হঠাৎ নিয়মিত অভিনয় থেকে কিছুটা দূরে সরলেন? আলাপচারিতায় উঠে আসে তাঁর অভিনয়জীবনের নানা প্রসঙ্গ।
আগের চেয়ে আপনি অভিনয় কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন? এর কারণ কী?
মাজনুন মিজান: ১৯৯৬ সালে আমার থিয়েটার শুরু। ২০০১ সাল থেকে আমি টেলিভিশনে প্রফেশনাল অভিনয় করি। ২০০৬ সালে হুমায়ূন স্যারের ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ সিনেমা করি। শুরুটা এভাবে বলার কারণ, আমি প্রথম থেকেই অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে চেয়েছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে কোথাও সিভি দিইনি। অভিনয়টা ইমোশনাল ব্যাপার ছিল। অভিনয়টাই করে যেতে চেয়েছি। এভাবে দীর্ঘ একটা সময় কেটে গেল। পরে মনে হলো, অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়াটা কঠিন, ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।
কেন কঠিন বা ভুল সিদ্ধান্ত মনে হয়েছে?
মাজনুন মিজান: সেই কথাই বলছি। মিডিয়ার প্রথম সারির ৫ জন ছেলে বা মেয়ে, ধরলাম ১০ জন ছেলে, ১০ জন মেয়ে ভালোভাবে সার্ভাইভ করতে পারছে। সেই সংখ্যায় আর অল্প কিছু যোগ হতে পারে। কিন্তু বেশির ভাগ অভিনয়শিল্পীর পেশা যদি শুধু অভিনয় হয়, তাহলে সার্ভাইভ করা কঠিন। এটা রিয়ালাইজ করতে করতে আমার অনেক সময় চলে গেছে।
এখন কেন এই সংকটের কথা মনে হলো?
মাজনুন মিজান: একসময় বিয়ে করলাম, আমার দুটি সন্তান হলো, মা আমাদের সঙ্গে থাকেন। এই দীর্ঘ সময় আমি কখনোই শুটিং বন্ধ করিনি। কিন্তু করোনায় যখন শুটিং বন্ধ হলো, তখন আমি আবিষ্কার করলাম, আমার পরিবারের সুরক্ষা হিসেবে যে টাকা আছে, সেটি এক মাসের খরচও নয়। তখন মনে হলো, পাগলের মতো আমি কী করেছি। তবে এখানে আমার আত্মপক্ষ সমর্থনের জায়গা আছে। আমি হয়তো প্রথম সারির ১০ জন বা ২০ জন হতে পারতাম। তাহলে ভালো থাকতাম। সেটা পারিনি; আমার কোয়ালিটি, সেই যোগ্যতা, গোল হয়তো ছিল। সেই ব্যর্থতা আমার। এখন প্রথম সারিতে নেই বলে কি আমি অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে পারব না? পারব, কিন্তু এখানে দীর্ঘদিনেও সেই জায়গা তৈরি হয়নি। ২০ বছর পরে আমার কাছে মনে হয়, শুধু অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল।