হিমালয় থেকে আন্দামান, বিহার থেকে ত্রিপুরা, এই গঙ্গাহৃদি জনপদের ভূমিপুত্র, এই বিস্তৃত সুপ্রাচীন বঙ্গদেশের যথাযথ উত্তরসূরি বাঙালি জাতিকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের সংগ্রামী অভিবাদন জানাই।
প্রখ্যাত নৃবিজ্ঞানী লুইস হেনরী মর্গানের মতে, ‘কোনো স্থানে স্মরণাতীত কাল থেকে বসবাসকারী আদিমতম জনগোষ্ঠী যাদের উদ্ভব-উৎপত্তি, ছড়িয়েপড়া, বিকশিত হওয়া কিংবা বসতি স্থাপন সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট ইতিহাস নেই তারাই সেই স্থানের আদিবাসী।’
আমাদের দেশে নিজেদের যারা আদিবাসী হিসেবে দাবি করে এই ভূমিতে তাদের আগমনের পটভূমি, বসতি স্থাপন ও বিকশিত হওয়ার ইতিহাস খুব বেশি পুরোনো নয়। কিন্তু এই ভূমিতে বাঙালির আগমনের ইতিহাস, বাঙালি কৃষকের চাষাবাদের ইতিহাস আরও অনেক বেশি পুরোনো। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত বাঙালির আদিমতম নিদর্শন চর্যাপদের বয়স ১ হাজার ৪০০ বছর প্রায়, যার কাছাকাছি সময়ে এখানকার কোনো নৃগোষ্ঠী তার ইতিহাস টেনে নিতে পারেনি।
কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, হীন রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা হাসিলের স্বার্থে একটি কুচক্রী মহল বাঙালিকে তার নিজভূমে বহিরাগত হিসেবে কালিমা লেপন করতে চায়। সংবিধানের 'আদিবাসী' শব্দটির কোনো অস্তিত্ব না থাকা সত্ত্বেও আদিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় এমন কিছু জাতিসত্তাকে, যারা এই ভূমিতে এসেছে মাত্র কয়েকশো বছর আগে। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৩(ক) অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে ‘উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়’র কথা, কিন্তু আদিবাসী বলতে কিছু নেই।