টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অধিকাংশ এলাকা। শহরের প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে এখন হাঁটু থেকে কোমরপানি। জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরীতে ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪টি প্রকল্পের কাজ চলছে। আগামী বছরের জুনে এসব প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা প্রকল্পের সময় আরও বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। এর মধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ৬ বছরে ৫ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এর পরও ভোগান্তি কমেনি নগরবাসীর।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কত অফুরন্ত আয়োজন নিয়েই না চাটগাঁ ভূখণ্ড বিরাজমান! ইট-কাঠ-কংক্রিট প্রাচীরের আবেষ্টনী থেকে শুরু করে মুক্ত নদী, সাগর, পাহাড়, ঝরনা আর সমতল ভূমি মিলে এই নগর হওয়ার কথা অসাধারণ। পাহাড়ি উঁচু-নিচু ভূমি থেকে সমতল ভূমি ছুঁয়ে আসা বৃষ্টির পানি নদী হয়ে সাগরে গড়াতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। শ্রাবণের শেষ বৃষ্টি এই নদীমাতৃক পাহাড়ি শহরকে গলাপানিতে বন্দি করেছে কেন? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।
তাহলে দোষ কার? নগর ব্যবস্থাপনার। হ্যাঁ, একটি নগরীকে তিলে তিলে যন্ত্রণা দিয়ে মারার প্রকৃত উদাহরণের নাম চাটগাঁ। এখানকার পাহাড়, টিলা, নালাকে মারা হয়েছে লোভ ও লাভের খপ্পরে।
সামগ্রিকভাবে দেখলে অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়– এসব এখন বাংলাদেশের নিয়মিত ঘটনা। কেন হচ্ছে এসব– উত্তর দিতে গেলে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত দুটি শব্দ ‘জলবায়ু পরিবর্তন’ দিয়েই শুরু করতে হবে। সঙ্গে যুক্ত হয় একটি নগরীর জল ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
জলবায়ু পরিবর্তন আজ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি। এর সুদূরপ্রসারী পরিণতি বিশ্বব্যাপী পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজকে প্রভাবিত করে। যেহেতু তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো আরও ঘন ঘন হয়ে উঠছে। কোনো একটি জায়গায় বছরের পর বছর আবহাওয়ার যে গড়পড়তা ধরন, তাকেই বলা হয় জলবায়ু। আবহাওয়ার সেই চেনাজানা ধরন বদলে যাওয়াকেই বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন। এটিই পৃথিবীতে ঘটছে খুব দ্রুত।