দৈনিক একজন মানুষকে ২৫০ গ্রাম দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য খাবার হিসেবে গ্রহণের পরামর্শ দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে, দৈনিক মাংস খাওয়া উচিত ১২০ গ্রাম। দেশে অবশ্য মাথাপিছু এ দুই খাদ্যপণ্য গ্রহণের হার নির্ধারিত এ মানমাত্রার চেয়ে অনেক কম। প্রতিদিন গড়ে একজন ৪০ গ্রাম মাংস ও ৩৪ দশমিক ১ মিলিগ্রাম দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের তথ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। যদিও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) তথ্য বলছে, দেশে মাংসের মাথাপিছু দৈনিক প্রাপ্যতা ১৪৭ দশমিক ৮৪ গ্রাম ও দুধ ২০৮ দশমিক ৬১ মিলিগ্রাম। সরকারের দুই সংস্থার তথ্যের এমন গরমিল নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে।
বিবিএস থেকে প্রকাশিত খানা আয়-ব্যয় জরিপ-২০২২-এর তথ্য অনুযায়ী, শহরে বসবাসকারী একজন মানুষ দৈনিক ৫০ দশমিক ৩ গ্রাম মাংস খায়। আর গ্রামে বসবাসকারীদের মধ্যে এ হার ৩৫ দশমিক ৪ গ্রাম। শহরবাসীর মধ্যে দৈনিক মাথাপিছু দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণের হার ৩৮ দশমিক ৫ গ্রাম। গ্রামের মানুষের মধ্যে এ হার ৩২ দশমিক ১ গ্রাম। সার্বিকভাবে দেশবাসীর দুধ ও মাংস গ্রহণের ক্ষেত্রে আদর্শ মানের চেয়ে ঘাটতি যথাক্রমে ৮৬ ও ৬৬ শতাংশ।
অন্যদিকে ডিএলএস সূত্রে জানা যায়, ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা অনুসরণ করলে ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে মাংসের চাহিদা ছিল ৭৫ লাখ ২০ হাজার টন। এ অর্থবছরে মাংস উৎপাদন হয়েছে ৯২ লাখ ৬৫ হাজার টন। অর্থাৎ ওই সময়ে মাংসের মাথাপিছু দৈনিক প্রাপ্যতা ছিল ১৪৭ দশমিক ৮৪ গ্রাম, যা আদর্শ মানের চেয়ে গড়ে ২৭ গ্রাম বেশি। একইভাবে দৈনিক মাথাপিছু ২৫০ গ্রাম হিসেবে দেশে দুধের চাহিদা ছিল ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টন। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে দুধ উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার টন। অর্থাৎ দুধের মাথাপিছু দৈনিক প্রাপ্যতা ছিল ২০৮ দশমিক ৬১ গ্রাম, যা আদর্শ মানের চেয়ে ৪১ দশমিক ৩৯ মিলিগ্রাম কম।