দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মোট শিক্ষকের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৩৬। তাদের মধ্যে অধ্যাপক আছেন ৪ হাজার ৬৬১ জন। সে হিসেবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ৩০ দশমিক ৫৯ শতাংশই অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই অধ্যাপক হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশে তেমন একটা দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের ভাষ্যমতে, গোটা বিশ্বেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক বা সমতুল্য কোনো পদে যোগদানের পর প্রতিটি পদোন্নতির জন্য শিক্ষকদের উল্লেখযোগ্য মাত্রায় গবেষণা ও শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে হয়। নির্দিষ্টসংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রকাশনা বা জার্নালে গবেষণাভিত্তিক মানসম্মত নিবন্ধ প্রকাশ করতে হয়, যার গ্রহণযোগ্য রিভিউ বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি দীর্ঘ সময় একাডেমিক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরই একেকটি পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ পান তারা। আবার কোনো কোনো দেশে পিএইচডি ছাড়া অধ্যাপক হওয়ার কোনো সুযোগই থাকে না। শিক্ষা কার্যক্রমের মানসম্মততা ও শিক্ষকদের নিয়মিত জ্ঞানচর্চা নিশ্চিতে দেয়া এসব শর্ত পূরণ করে অধিকাংশেরই অধ্যাপক হওয়া হয় না। যদিও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন। নির্দিষ্ট সময় পার হলেই পদোন্নতি পেয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। আবার এক্ষেত্রেও জ্ঞানচর্চা বা গবেষণার মানের পরিবর্তে রাজনৈতিক বিবেচনাসহ অন্যান্য ইস্যু প্রাধান্য পায় বেশি। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিন দিন গবেষণায় পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে বিষয়টির বড় ভূমিকা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২১ এবং বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অধ্যাপক। সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক আছে যথাক্রমে ১৮ দশমিক ৩৭ ও ৩৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। প্রভাষক আছে মাত্র ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। এ প্রভাষকদের বেশির ভাগই আবার নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। পুরনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় প্রভাষকের হার তুলনামূলক অনেক কম।