পরীক্ষা নামক ছদ্মযুদ্ধে সব শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয় না। ফল প্রকাশ হলে সব অভিভাবক মিষ্টির দোকানে হাজির হন না। মিষ্টি বিতরণের উৎসবেও সবাই যোগ দেয় না। সবার হাসিমাখা ছবি সংবাদমাধ্যম বা সামাজিক মাধ্যমে দেখা যায় না। যাদের পরীক্ষার ফলের খবর আশপাশে জানানোর নানা আয়োজন থাকে, তারা নিশ্চয় সৌভাগ্যবান। এদের বাইরেও একটি অংশ থাকে; কেতাবি ভাষায় তারা ফেল বা অকৃতকার্য। তারাও নিশ্চয় সাধ্যমতো চেষ্টা করে। তারপরও ফল বিপর্যয় ঘটে। বিপর্যয়ের পেছনের সেই গল্প আমরা জানতেও পারি না। মোটা দাগে কিছু ধারণা করা যায়।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মাথায় ফল প্রকাশের বাধ্যবাধকতা এর একটি কারণ হতে পারে। কয়েক বছর ধরেই নিয়মটি কার্যকরভাবে মানা হচ্ছে। ফলে দুই মাসের মাথায়ই ফল হাতে পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। যা হোক, এ বছর ৮০ দশমিক ৩৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। ২০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৬ লাখ পাস করা মানে ৪ লাখই অকৃতকার্য। স্বাভাবিকভাবেই এখন পাস করাদের নিয়েই মাতামাতি হবে। এসএসসির পর তারা কোথায় ভর্তি হবে, কোন কলেজে কত আসন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হবে। এর বিপরীতে প্রায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী কেন পাস করতে পারল না, তাদের আলোচনাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয় কি?
এসএসসি ও সমমানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক পরীক্ষায় প্রত্যাশা থাকে– সবাই পাস করুক। বাস্তবতা হলো, সবাই পাস করে না। এসএসসিতে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল ২০২১ সালে। করোনার কারণে তিন বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থীরা সহজেই পাস করেছিল। কয়েক বছরের করোনার ধাক্কা পেরিয়ে এবারের এসএসসির ফল আমরা স্বাভাবিক হিসেবে দেখতে পারি। কারণ এবার সব বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা হয়েছে। সে জন্য অন্তত দুই বছরের তুলনায় পাসের হার কিছুটা কমেছে। তাও স্বস্তিদায়ক, ৮০ শতাংশের ওপরে পাস করেছে।