অদ্ভুতভাবে অনেক দিন বাদে ফের মনিপুর দেশ-বিদেশের শিরোনামে উঠে এলো। মণিপুর, আসাম, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, উত্তর-পূর্ব ভারতের চমৎকার ছোট ছোট সব রাজ্যগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন অতুলনীয়, তেমনি তীব্র অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। ওপর ওপর দেখলে মনে হয় বড় সুখী ভারতের বিজ্ঞাপন এখানকার বাসিন্দাদের জীবন যাপন। বাস্তবে তা নয়। অর্থনৈতিক সংকট, মাদক সমস্যা, সন্ত্রাস, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সব মিলিয়ে স্বাধীনতার পর থেকেই অধিকাংশ স্বাধীন এই ছোট ছোট জনপদের অবস্থা যথেষ্ট সংকটজনক। আমরা, ভারতের তথাকথিত মূল ভূখন্ডের জনগণের বড় অংশ সাধারণত কখনোই মণিপুর, নাগাল্যান্ড নিয়ে মাথা ঘামাই না। বরং সময় সুযোগ পেলেই তাদের নানাভাবেই হেনস্তা করি। মঙ্গোলিয়ান গড়ন বলে তাদের বিদ্রুপ করি। টিটকিরি দিই। সেভাবে কাছে টেনে নিই না। হঠাৎ হঠাৎ মারাত্মক কোনো ঘটনার পর আমাদের উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে দরদ উথলে ওঠে। আমরা যদি সত্যিই নর্থ ইস্টকে নিয়ে আগ্রহী হতাম, তাহলে নাগাল্যান্ডের জনতার ক্ষোভকে স্বাধীনতার পর যেভাবে নৃশংসভাবে দমন করেছে তা সমর্থন করতে পারতাম না।
দমন করেছে বলা তো অনেক হালকা হয়ে গেল, বলা উচিত যে নির্মমতায় তৎকালীন নেহরু সরকার মিলিটারি নামিয়ে নাগাল্যান্ডকে তাঁবে এনেছিল তা নিশ্চিত মানবিক অধিকার লঙ্ঘন। অথচ নাগাল্যান্ডের জনতার নয়নমণি ফিজোকে স্বয়ং মহাত্মা গান্ধী কথা দিয়েছিলেন যে ভারত স্বাধীন হলে ফিজোর সঙ্গে আলোচনা করে নাগাল্যান্ডের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে। সবাই জানেন যে নাগা জনগণের দরদ ছিল নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি। আজাদ হিন্দ ফৌজ নাগাল্যান্ডের ভেতর দিয়ে কদম কদম এগিয়ে চলেছিল মণিপুরের দিকে।