দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়া সত্ত্বেও বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি করতে হচ্ছে। জানা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে আগের বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ চাল আমদানি করা হয়েছে। ডলার-সংকটের এই সময়ে দেশে উৎপাদনযোগ্য এই খাদ্যশস্য আমদানির পেছনেই খরচ হয়েছে ৫১ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের বেশি (প্রায় ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা)। সম্প্রতি আরও ৫ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার ঘোষণা অনেকটাই রাজনৈতিক। উৎপাদনের হিসাব বাড়িয়ে বলা হয়। চালের চাহিদা নিরূপণের ক্ষেত্রে অপচয়ের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। কারও কারও মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেও চাল আমদানি বেড়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রশ্রী বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চালের হিউম্যান কনজাম্পশন (ভোগ) ছাড়াও নন-হিউম্যান কনজাম্পশন আছে। হিউম্যান কনজাম্পশন হিসাবে উদ্বৃত্ত ঠিকই আছে। তবে নন-হিউম্যান কনজাম্পশনও বাড়ছে। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ চাল নন-হিউম্যান কনজাম্পশনে ব্যয় হয়ে যায়। এসব কারণে কিছু কিছু সময় একটা ব্যালেন্সিং পজিশনে আনতে এবং সিকিউরিটি স্টক রেডি রাখার জন্য সরকারকে আমদানি করতে হয়।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যানুযায়ী, দেশের বর্তমান জনসংখ্যার হিসাবে চালের চাহিদা বছরে ২ কোটি ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭০৬ টন। মাথাপিছু দৈনিক চাল খাওয়ার পরিমাণ ৩২৮ দশমিক ৯ গ্রাম ধরে এই চাহিদা নিরূপণ করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছর দেশে মোট চাল উৎপাদিত হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন। সে হিসাবে দেশে চাল উদ্বৃত্ত থাকার কথা। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই থেকে মে) চাল আমদানি করা হয়েছে ১২ লাখ ৩৭ হাজার ১৬ টন। এ পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।