গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের কাছে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র ভবনটি অনেকেরই হয়তো চোখে পড়ে, কিন্তু তাদের কার্যক্রম কারও চোখে পড়ে না; গ্রন্থপ্রেমীদেরও নয়। জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের কোনো ভূমিকা সাংস্কৃতিক পরিসরে আছে কি না, তা-ও যেন ভুলতে বসেছেন সবাই। বই নিয়ে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে যেসব পরিবর্তন ঘটেছে এবং নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির কোনো অবদান বা উদ্যোগ তাতে দেখা যায় না।
বাংলাদেশের লেখক-প্রকাশকদের অভিযোগ, সারা বছর দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েকটি বইমেলা করা এবং সরকারি অর্থে বই কিনে পাঠাগারে পাঠানোর মধ্যেই মূলত জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের কাজ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। বইমেলাগুলোও যেন নিয়ম রক্ষার। দেশের প্রকাশনার বিকাশে সেসবের কোনো ভূমিকা নেই। তাদের কাজের কোনো পরিকল্পনা ও ধারাবাহিকতা নেই। দিনের পর দিন প্রতিষ্ঠানটির কাজের পরিধি ক্রমেই কমছে। প্রকাশনার উন্নয়ন এবং জাতীয় ভিত্তিতে লেখক-প্রকাশক-পাঠক সমাবেশ ঘটিয়ে দেশব্যাপী বইয়ের প্রসারে কোনো প্রত্যাশিত লক্ষ্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র অর্জন করতে পারছে না। পাঠমনস্ক জাতি ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যে যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হয়েছিল, সেটি তার প্রত্যাশিত লক্ষ্য হারিয়ে ফেলেছে।