খুলনা নগরীর হৃদপিণ্ড হিসেবে একসময় পরিচিত ছিল ময়ূর নদ। যদিও সেই হৃদপিণ্ড এখন কচুরিপানায় ঢাকা, দুই পাড়ে জমেছে আবর্জনার স্তূপ।
এসবের মধ্যে থেকে ময়ূর নদ খুঁজে নিতে রীতিমতো ‘জহুরির চোখ’ প্রয়োজন। কুচকুচে কালো নদের পানির দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে স্থানীয়দের নাক চেপে পথ চলতে হয়।
খুলনা শহরের পশ্চিম দিক দিয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত গঙ্গা অববাহিকার নদ ময়ূর মূলত ভৈরব নদের একটি স্রোতধারা; যা কাজীবাছা-ভৈরব হয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।
বটিয়াঘাটার পুঁটিমারী ও তেঁতুলতলা গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গল্লামারী ব্রিজ থেকে ময়ূর নদ নামে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়েছে জলধারাটি। এরপর রায়েরমহল হয়ে খুদিয়ার খাল নামে বিল ডাকাতিয়ায় গিয়ে মিশেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১১ কিলোমিটার। প্রশস্ততা স্থান ভেদে ৪০ থেকে ১০০ ফুট এবং গভীরতা ১৫ থেকে ২৪ ফুট।
খুলনার অন্যতম প্রবেশদ্বার গল্লামারী সেতু এলাকা দিয়েই নগরে প্রবেশ করেছে ময়ূর। দখলে-দূষণে একসময়ের খরস্রোতা জলাধার এখন কেবল মরা খাল। আগে রূপসার সঙ্গে ময়ূরের সরাসরি সংযোগ থাকলেও ময়ূর এখন বদ্ধ নদ, ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়।
ময়ূরের এ মৃতপ্রায় অবস্থার কারণ হিসেবে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয়রা বলছেন নানা কারণের কথা। এর মধ্যে রয়েছে, অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা না থাকা, জনসংখ্যার চাপ, স্থানীয়দের মধ্যে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতার অভাব এবং অপর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ।