রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববাণিজ্যে ডি-ডিলারাইজেশন প্রক্রিয়া গতি পেয়েছে। অনেক দেশই এখন মার্কিন ডলারকে পাশ কাটিয়ে ভিন্ন মুদ্রায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এর মধ্যে আবার ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো গত এপ্রিল মাসে নতুন রিজার্ভ মুদ্রা চালুর ঘোষণা দিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে দুটি বিষয় নিয়ে বিচার–বিবেচনার অবকাশ আছে। বিষয় দুটি হলো—প্রথমত, ব্রিকস জোটের দেশগুলোর সবার স্বার্থ এক নয়; দ্বিতীয়ত, নতুন মুদ্রার সম্ভাবনা ও এর বিশ্বাসযোগ্যতা। খবর অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের।
ব্রিকস জোটের সদস্যদেশগুলো নিজেদের মধ্যে নিজেদের মুদ্রায় বাণিজ্যের চিন্তা করছে। কারণ, অভিন্ন মুদ্রা থাকলে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্যই কেবল বাড়বে তা নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নিজেদের মুদ্রা ডলারে রূপান্তরের যে উচ্চ ব্যয়, তা থেকেও রেহাই পাবে তারা।
প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ব্রিকসের সদস্যদেশগুলো ভারত ও চীনের নেতৃত্বে জাতীয় মুদ্রায় নিজেদের লেনদেন সম্পন্ন করতে চায়। নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য শুরু হলে ব্রিকস ডিজিটাল বা বিকল্প মুদ্রায় লেনদেনের কথাও সক্রিয়ভাবে চিন্তা করবে বলে ইঙ্গিত রয়েছে।
ব্রিকস হলো পাঁচটি দেশের জোট। এসব দেশের নামের আদ্যক্ষর নিয়েই এই জোটের নামকরণ হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর সবাই যে অভিন্ন কারণে এই উদ্যোগে সমর্থন দিচ্ছে, তা নয়, বরং সবার ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থও রয়েছে। রাশিয়া ও চীন রাজনৈতিক বিবেচনায় এই ডি-ডলারাইজেশন প্রক্রিয়ায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সুইফট থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের। সে কারণে তারা ডলারভিত্তিক আর্থিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ও পাশ কাটাতে প্রাণান্ত চেষ্টা করছে। আবার চীন নিজস্ব মুদ্রা রেনমিনবিকে সামনে আনার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুতের ১৭ শতাংশই এখন রেনমিনবিতে রাখা আছে। ফলে তারা চীনা মুদ্রায় লেনদেন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে, এটাই স্বাভাবিক।