পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় খুশির দিন। তবে দিনটি শুধু আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠতে বলে না; বরং ত্যাগের উজ্জ্বল মহিমা ধারণেও উদ্বুদ্ধ করে। এ উৎসবে মুসলমান খুঁজে পায় আত্মোৎসর্গে বিলীন হওয়ার অবারিত পথ। বাংলাদেশে এ ঈদে যত গবাদি পশু কোরবানি হয়, তা সারাবছর জবাইকৃত পশুর প্রায় ৪৯ শতাংশ। কিন্তু সত্যিকার অর্থে কতটুকু আন্তরিকতা নিয়ে এ কাজ করছি, নাকি শুধুই নিয়ম রক্ষা কিংবা নাম কামানো বা আত্মম্ভরিতা প্রকাশের জন্যই এ উৎসবে শামিল হচ্ছি?
আত্মত্যাগের মহান শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কোরবানি করলে কিছু আত্মজিজ্ঞাসায় মগ্ন হতে হবে। প্রথম কথা হলো, আত্মত্যাগ আমরা চাই কিনা? যদি জবাব ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে অবশ্যই প্রশ্ন আসে– কোন পদ্ধতিতে চাই? নিজের মনমতো, না আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাঠামোতে? যদি শেষোক্তটাই জবাব হয় তবে ভাবতে হবে, আসলে কতদূর সত্য কথা আমি বলছি। কোরবানি একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই হতে হবে। এতে সামান্যতম খাদ বা ভেজাল থাকলে শুধু মাংস খাওয়াই সার হবে; কোরবানি হবে না।
এবার আসা যাক আনুষঙ্গিক বিষয়ে। অনেক ক্ষেত্রে যেভাবে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বেশি দামের পশু ক্রয় করে পত্রিকায় ফলাও করে প্রচার করা হয়, তা কি সংগত, নাকি নিজের বিত্তবৈভবের বাহাদুরি প্রদর্শনই মূল লক্ষ্য! নইলে পাঁচ-সাতটা গরু কোরবানি করেও সবটুকু ভালো মাংস ফ্রিজে চলে যায় কী করে? অথচ পাশেই অপেক্ষা করতে থাকে ক্ষুধার্ত ও বঞ্চিত মানুষের দল।