স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে বাংলাদেশ ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। প্রায় ৯৬৯ গুণ বেশি। ‘উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে দেশের ৫২তম এই বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। বাড়ছে বাজেট, বাড়ছে দেশের মানুষও। কিন্তু নিদারুণভাবে কমছে অরণ্য, জলাভূমি, সবুজবলয়, বৃক্ষ, নদী, প্রাণবৈচিত্র্য, পাহাড় কিংবা উন্মুক্ত পাবলিক প্রান্তর। প্রতি বছর দেশের জাতীয় বাজেট বাড়ে, কিন্তু কমতে থাকে জাতীয় পশুর সংখ্যা, হারিয়ে যায় জাতীয় পাখির আবাস। তাহলে এই উন্নয়ন অভিযাত্রা কী কেবল মানুষেরই জন্য? এভাবে কী এককভাবে মানব প্রজাতি দুনিয়ায় টিকে থাকতে পারবে? জাতীয় বাজেট কি মানুষের মতোই দেশের প্রাণ-প্রকৃতি-প্রতিবেশকে সমান বিবেচনায় দেখে? কৃষি, দুর্যোগ, পানিসম্পদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন’ মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখাই কেবল পরিবেশবান্ধব চিন্তা নয়। সামগ্রিক বাজেট চিন্তা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবেশ সুরক্ষার ছাপ থাকা জরুরি। আয়তনে ছোট হলেও প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে ভরপুর বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ও উন্নয়নচিন্তা প্রতিবেশমুখী হওয়া জরুরি। আর এটিই হয়ে উঠতে পারে পরিবেশ ও জলবায়ু সংকটে জর্জর দুনিয়ার বুকে এক অনন্য দলিল, বাংলাদেশের সত্যিকারের পরিচয়।