পরিবর্তশীল বিশ্বে দিন দিন রোগের বোঝা বেড়ে চলেছে। সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব কাটাতে না কাটাতেই বিশ্ব অসংক্রামক রোগের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশেও অসংক্রামক ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের আধিক্য বেড়েছে। আর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি সংক্রামক রোগগুলো। রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হলেও তাতে সরকারের উদাসীনতা রয়েছে। ফলে চিকিৎসা সেবার ওপর চাপ পড়ছে বেশি। আর এতে ব্যক্তির খরচও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় বেশ কয়েক বছর ধরে ব্যয় কমিয়েছে সরকার। অন্যদিকে ব্যয় বাড়িয়েছে বেসরকারি খাত। দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে হলে রোগ প্রতিরোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার কথা বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ (ডব্লিউএইচও) বিভিন্ন সংস্থা।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বলতে আমরা বুঝি অসুস্থ হওয়ার আগেই নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করেছে—অসুস্থতা, রোগ প্রতিরোধ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত সমস্যা প্রতিরোধে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার সঙ্গে কাউন্সেলিংও জড়িত। বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে বলেছে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিন। গবেষণা সংস্থাটি বলছে, প্রাপ্তবয়স্করা সময়ে সময়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের কাছে গিয়ে তাদের সুস্থতা পরীক্ষা করবেন। এতে রোগের স্ক্রিনিং বা রোগ শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হবে। সাধারণত শতভাগ রোগ শুরুতে শনাক্ত বা রোগ সৃষ্টির আগে সমস্যা চিহ্নিত হলে প্রতিরোধ সম্ভব। কেউ অসুস্থতা বোধ না করলেও নিয়মিত পরীক্ষার কথা বলা হয়। কেননা এতে ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যগত সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো জীবনাচারের শুদ্ধতা। পরিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের সঙ্গে রোগ প্রতিরোধের বিষয়টি গভীরভাবে জড়িত। এসব বিষয় ব্যবস্থাপনার আওতায় আনার মৌলিক দায়িত্ব রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু গত কয়েক বছরে রোগ প্রতিরোধ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যয় কমিয়েছে সরকার। যদিও বেসরকারি খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।