১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বলিউড সিনেমা ‘ভাই ভাই’তে লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া একটি গান ‘ইস্ দুনিয়া মে সব চোর চোর, ইস্ দুনিয়া মে সব চোর/ কোই পয়সা চোর, কোই মুরগি চোর/ অউর কোই দিল কা চোর/…কোই চোরি করে খাজানে কি, কোই আনে ইয়া দো আনে কি/ কোই ছোটা চোর কোই বড়া চোর/ ইয়ে ব্যায়ঠে চোর, ও খাড়া চোর/ ইস্ দুনিয়া মে সব চোর চোর...’। প্রায় সাত দশক আগে লেখা গানটির কথা এতকাল পরেও আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে কত প্রাসঙ্গিক! আজ আপনি যদি চারদিকে তাকান, ছোট-বড় নানা কিসিমের চোর চোখে পড়বে। এসব চোরের কেউ লুটছে ভান্ডার, কেউ হাতিয়ে নিচ্ছে যতটুকু পারছে।
কাউকে সরাসরি চোর বলা অনুচিত বা কারও ওপর চুরির অভিযোগ আনাও ঠিক নয় সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া। এখানে মান-সম্মানের ব্যাপার জড়িত। গোপনে চৌর্যবৃত্তিতে নিয়োজিত ভদ্রবেশী ব্যক্তিটিকে চোর বললে তিনি মানহানির মামলা ঠুকে দিতে পারেন। তাই চুরি নামের আদিতম পেশাটির আধুনিক প্রতিশব্দ বেরিয়েছে—‘আত্মসাৎ’, ‘তছরুপ’, ‘অনিয়ম’ এবং সর্বোপরি ‘দুর্নীতি’। প্রকারান্তরে এসবই চুরি। আমরা কতগুলো অদ্ভুত নিয়ম মেনে চলি। যেমন কেউ যদি মিথ্যা কথা বলে ভদ্রতার খাতিরে, তাঁকে নাকি বলা যাবে না ‘আপনি মিথ্যা বলছেন।’ বলতে হবে, ‘আপনি “অসত্য” বলছেন।’ অথচ মিথ্যা আর অসত্যের মধ্যে অর্থগত কোনো পার্থক্য নেই। কয়েক বছর আগে ঢাকায় একটি দেয়াল লিখন (চিকা) দেখেছিলাম, ‘ফাইল ঠেকিয়ে ঘুষ খাওয়া আর পিস্তল ঠেকিয়ে ছিনতাই করা সমান অপরাধ’। কথাটি উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়।