মনোনয়নপত্র দাখিলের আগপর্যন্ত জায়েদা খাতুনের নামও জানতেন না অনেকে। ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা হিসেবেই ছিল তাঁর পরিচয়। সেই জায়েদা এখন গৃহান্তরাল থেকে নগরমাতা। রাজনীতি ও নির্বাচনে নবীন জায়েদা খাতুনের কাছেই ধরাশায়ী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঝানু মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান। তা-ও প্রায় ১৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে। চমক জাগানো এই ফলাফল নিয়েই গাজীপুরসহ দেশজুড়ে চলছে নানান বিশ্লেষণ। চলছে কারণ খোঁজার চেষ্টা।
রাজনীতিবিদসহ গাজীপুরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বলছেন, জায়েদা খাতুনকে প্রতিদ্বন্দ্বী না ভেবে তাঁর ছেলেকে প্রতিপক্ষ করা, প্রচারে আওয়ামী লীগের নেতাদের সমন্বয়হীনতা, দলের একটি অংশের ছদ্মবেশে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের পক্ষে কাজ করা, অন্যান্য দলের সমর্থকদের ভোট, মা-ছেলের দল বা নৌকা প্রতীক নয়, ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভোট প্রার্থনা এবং বিপুল নারী ভোট এই ফলাফলের কারণ। তাঁরা বলছেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারলেও দল হারেনি। কারণ, জায়েদা খাতুনও আওয়ামী লীগ পরিবারের। অন্যদিকে এটিকে ব্যক্তি আজমতের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরের জয় বলছেন অনেকে।
অনেকে বলছেন, ২০১১ সালের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হলো ২০২৩ সালে গাজীপুরে। সেবার নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডাকসাইটে নেতা শামীম ওসমানকে প্রায় দুই লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র হয়েছিলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। আওয়ামী লীগের একাংশের আশীর্বাদ পাওয়া আইভী নৌকা প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তিকে হারানোর ওপর জোর দিয়েছিলেন। জাহাঙ্গীর মাকে নিয়ে প্রচারে নৌকা নয়, ব্যক্তিকে হারানোতে জোর দিয়েছেন। দলের একজন বড় নেতার সমর্থন পাওয়ার কথাও বলাবলি হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর বা আওয়ামী লীগের কোনো নেতা মন্তব্য করেননি।