দেশে ৭০ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী অসংক্রামক রোগ। এর মধ্যে আবার ৩০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। আর হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। জনস্বাস্থ্যের জন্য বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় সরকার ২০১৮ সাল থেকে ৫৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়হীনতায় গত কয়েক মাস নিবন্ধিত প্রায় দেড় লাখ রোগী নিয়মিত বিনামূল্যের ওষুধ পাচ্ছেন না। এরই প্রভাব পড়েছে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে। ছয় মাস আগেও রোগটি নিয়ন্ত্রণের হার যেখানে ছিল ৬০, এখন তা কমে ৫৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (এনসিডিসি) পরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন সমকালকে বলেন, ‘মাঝপথে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সেবন বন্ধ করলে সমস্যা দেখা দেয়। রোগীদের নিয়মিত ওষুধ সেবন নিশ্চিতে গত বছর ৯০ কোটি টাকার ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এ বছর ১০০ কোটি টাকার ওষুধ কেনা হয়েছে। এর পরও ওষুধ সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ছে। এর কারণ অপারেশনাল প্ল্যান পাস হতে তিন থেকে চার মাস লাগে। এ ছাড়া মাত্র ছয়টি গাড়ি থাকায় এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) সব জায়গায় সঠিক সময়ে ওষুধ দিতে পারে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘অপারেশনাল প্ল্যান থেকে ওষুধ কিনে এ কর্মসূচি চালানো সত্যিই কঠিন। স্থায়ী ব্যবস্থা জরুরি। রাজস্ব খাত থেকে সেটি করা যায় কিনা তার চেষ্টা চলছে।’
এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করতে আজ বুধবার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য– ‘নির্ভুলভাবে রক্তচাপ মাপুন, এটি নিয়ন্ত্রণে রাখুন, দীর্ঘায়ু হোন’। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতা দূর করে সঠিকভাবে উচ্চ রক্তচাপ নির্ণয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ে সেবার সুযোগ সৃষ্টি করা গেলে খুব সহজে রোগটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।