উপকূলে আঘাত হানার আগেই ঘূর্ণিঝড় মোখা শক্তি হারানোয় বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হয়েছে। এটি স্বস্তির কথা। তবে যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিলে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। এই ঘূর্ণিঝড় থেকে আমাদের শিক্ষণীয় হলো মানুষের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতির চালিকা শক্তি বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে যেকোনো বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে গত শুক্রবার রাত ১১টায় আগাম সতর্কতায় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করা হয়। মহেশখালীতে থাকা ভাসমান দুটি টার্মিনালের একটি গভীর সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়। এই টার্মিনালের মাধ্যমে আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে গেছে। এর ফলে চট্টগ্রামের জনজীবন যেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে, তেমনি শিল্পকারখানায় উৎপাদনও কমে যায়।
গ্যাস স্টেশনগুলোতে গ্যাস না থাকায় সড়কে যানবাহন কম নামে এবং যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন। বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় অনেকের বাড়িতে চুলা জ্বলেনি; কেউ কেউ বিদ্যুৎ–চালিত চুলায় রান্নার কাজ সেরেছেন। অনেকে দোকান থেকে খাবার কিনে খেয়েছেন। এমনকি বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালের রোগীদের খাবার সরবরাহেও সমস্যা দেখা দেয়।
গতকাল এই সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত মহেশখালীর ভাসমান দুটি টার্মিনালের একটি চালু হয়েছে। এতে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ আবার শুরু হলেও চাপ কম ছিল। চট্টগ্রামের রাউজান ও শিকলবাহা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র দুটিও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল।