যার সাথেই কথা হচ্ছে, কুশলাদির পর পরই উঠছে দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গ। প্রত্যেকেরই কথা ‘আর পারছি না’। এই যে মানুষের হাহাকার, হতাশা কে শোনে তার আর্তনাদ? ঠিক এই বাক্য কয়টি লেখার পরই খবর পেলাম, খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম খুচরা পর্যায়ে কেজিতে ১৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির দাম বাড়িয়ে প্রতি কেজি ১২০ টাকা এবং প্যাকেটজাত পরিশোধিত চিনির দাম প্রতি কেজি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ বাজারে আগে থেকেই চিনি বিক্রি হচ্ছিল ১৪০ টাকা কেজি দরে।
নিত্যপণ্যের বাজারে একটা ভয়ংকর অরাজকতা চলছে, যেন কোথাও কেউ নেই মানুষের দুঃখ দেখবার। হ্যাঁ আমরা জানি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নতুন কথা নয়। প্রায় সারা বছর মূল্যবৃদ্ধির আঁচে সাধারণ মানুষের হাত পুড়েই চলে। প্রান্তিক মানুষদের কথা বাদই দিলাম, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারেও আজ নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর দশা। হয়তো এখন নুন কেনারও অবস্থা নেই অনেকের।
এক লাফে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৫১ শতাংশ বাড়ানোর পর এখন প্রতিমাসে বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। আকাশ ছোঁয়া জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার প্রত্যক্ষ প্রভাব এসে পড়ছে বাজারে। রান্নার গ্যাসের দামও বাড়তি। ভোজ্য তেলের মূল্যও কয়দিন আগে বাড়ানো হয়েছে এবং সাথে সাথে কার্যকর হয়েছে। চিনি ও তেলের দাম প্রতিদিন চড়চড় করে বেড়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ বাড়িতে তেল দিয়ে মেখে আলুসিদ্ধ ভাত খাওয়া বা এই গরমে একটু শরবত পান করাও যেন আজ নিষিদ্ধ হতে চলেছে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা বেশির ভাগ মানুষ। করোনা মহামারির রেশ কাটতে না কাটতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত বিশ্ব পরিস্থিতিতে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বাড়াবার সিদ্দান্ত নেয়। আইএমএফ থেকে ঋণ নিতে গিয়ে এখন পুরো জ্বালানি খাত থেকেই ক্রমান্বয়ে ভর্তুকি তুলে দিচ্ছে সরকার। এর প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক অর্থনীতিতে।