প্রায় দেড় বছর ধরে পত্রপত্রিকা ও বেতার-টিভিতে পাকিস্তানের রাজনৈতিক উত্তাপ এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ছিল; কারও ইচ্ছা না থাকলেও দেশটির চলমান ঘটনাপ্রবাহ সম্পর্কে তাকে জ্ঞাত করেছে। সেই ঘটনাপ্রবাহের সর্বশেষ সংযোজন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের অতি-নাটকীয় গ্রেপ্তার পর্ব। গ্রেপ্তার না বলে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ‘অপহরণ’ বলে যাঁরা দাবি করেছেন, তাঁরাও খুব একটা অতিরঞ্জন করেননি। কারণ, যে ইমরান খানের সমর্থকদের শক্ত প্রতিরোধের কারণে মাসের পর মাস পাকিস্তানের পুলিশ তাঁকে একাধিক মামলা থাকলেও গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেই খান সাহেবকে শেষ পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণ থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে ইমরান খান পুরোপুরি ক্রিকেটের নায়ক থেকে দেশের রাজনৈতিক নায়ক হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন। তাঁর দল পিটিআই (তেহরিক-ই-ইনসাফ) শুধু বিপুল ভোটে নির্বাচনেই জয়লাভ করেনি; নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ ও ভুট্টো পরিবারের পিপলস পার্টি উভয়কে কুপোকাত করে সরকার গঠন করার সাফল্যও দেখিয়েছে।
শুধু তাই নয়; ইমরান খানই পাকিস্তানের একমাত্র রাজনৈতিক নেতা, যিনি প্রথমবারের মতো ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়কে ভণ্ডুল করতে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ষড়যন্ত্রকে সরাসরি সমালোচনা করেছেন। এমনকি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তান ও তার গণতন্ত্রকে ধংস করার জন্য দেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে দায়ী করতে শুরু করেন। বলতেই হবে, পাকিস্তানের মতো একটি দেশে এ রকম সাহসী উচ্চারণ আগে কেউ করতে পারেননি।