শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ: নানা প্রসঙ্গ

আজকের পত্রিকা কুদরত-ই-গুল প্রকাশিত: ০৮ মে ২০২৩, ১৪:১৬

পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর পরলোকগত হওয়ার পর নানামুখী দেনার দায় ঠাকুর পরিবারের ঘাড়ে চাপে। এ জন্য বেশ কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে হয়। এমনকি কিছু আসবাবও বিক্রি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথের বাবা। কিন্তু জমিদারি ক্ষয়ে যায়নি তখনো। নানাবিধ কারণে পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিবারের ছোট ছেলেকে বেছে নিলেন শিলাইদহের জমিদারি দেখভাল করার জন্য; যা শুনে ঠাকুর পরিবারের অনেকে অবাক বনে যান। কবিস্বভাবের এই যুবক কীভাবে জমিদারির মতো গুরুতর ঝামেলা সামাল দেবেন! কিন্তু বাড়ির অভিভাবকের কথাই শিরোধার্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিনা বাক্যব্যয়ে রাজি হলেন। ৩০০ টাকা মাসোহারায় বাবার কথামতো স্ত্রী, দুই ছেলে এবং তিন মেয়েসহ সোজা চলে এলেন শিলাইদহে। মজার ব্যাপার এই ৩০০ টাকায় রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী সংসার চালিয়ে উদ্বৃত্ত টাকা স্বামীর বই কেনার জন্য গুছিয়ে রাখতেন। অনেকের ধারণা হতে পারে, জমিদারি চালান, ফলে নিজের ইচ্ছামতো টাকা খরচের সুযোগ থাকার কথা। কিন্তু তা সম্ভব ছিল না। কারণ, বাবাকে কড়ায়গন্ডায় হিসাব দিতে হতো। যদিও রবীন্দ্রনাথ জমিদারির খরচ মিটিয়ে বেশ লাভের মুখ দেখাতে পেরেছিলেন।


অর্থনৈতিক আয়-উন্নতি ছাড়াও শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথের জন্য আশীর্বাদের মতোই ছিল বলা যায়। এখানেই ঘটে তাঁর বহুমুখী সত্তার উদ্বোধন। বিষয়টা যেন এমন, ‘আমি এসেছি তবে কি শেষে/ কোন সবুজ দ্বীপেরও দেশে।’ এখানে এসে তাঁর সাহিত্যের শাখা-প্রশাখা পল্লবিত হলো, ফুলে-ফলে ভরে উঠল সৃষ্টির বাগান। এখানে থাকতেই তিনি পুরোদমে ‘সাধনা’ এবং ‘ভারতী’ পত্রিকায় লেখাসহ সম্পাদনার কাজ চালিয়ে গেছেন। কবিতা, ছোটগল্প, গান, প্রবন্ধ এবং ছিন্নপত্রের নানা চিঠি তিনি লিখেছেন অবলীলায়। এখানেই তিনি নিবিড় পরিবেশে, একান্তে করেছিলেন গীতাঞ্জলির সফল অনুবাদ; অর্থাৎ সাহিত্যিক হিসেবে বিকাশের একটা বড় অবদান এই শিলাইদহ দাবি করতেই পারে। আর পেয়েছিলেন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর একান্ত সুযোগ। এর ভেতর দিয়ে উন্মোচিত হয় রবীন্দ্রসত্তার নানা দিক। পরিবেশ সাহিত্যিক সত্তার পাশাপাশি ব্যক্তিসত্তা উন্মোচনের যে দারুণ এক অনুষঙ্গ হতে পারে, তা রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহে আগমন এবং বাস এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তই বটে।


শিলাইদহে তিনি সন্তানদের ডানপিটেমিকে প্রশ্রয় দিয়েছিলেন অবলীলায়। তিনি মনে করতেন ইন্দ্রিয়চর্চার জন্য যেখানে খুশি ঘুরে বেড়ানো, ঘোড়ায় চড়া, মাছধরা, নৌকা বাওয়া, লাঠি-সড়কি খেলা, সাঁতার কাটা, ঘর গোছানো, রান্নায় সহযোগিতা করা ইত্যাদি বিষয়ে মনোযোগী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বলা বাহুল্য, রবীন্দ্রনাথ নিজেও ভালো সাঁতার কাটতেন। তিনি গড়াই নদে এপার-ওপার অনায়াসে সাঁতার কাটতেন। এ ছাড়া শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী রোববার কাজের লোকদের ছুটি দিতেন। কারণ তিনি ঘরের সব কাজ সন্তানদের দিয়ে করাতেন। রান্নার কাজে সহায়তা করার জন্য তাঁদের প্রস্তুত করতেন। এতে ছিল রবীন্দ্রনাথের পূর্ণ সমর্থন। এতে করে তারা যেন স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে। প্রসঙ্গত, একটু মনোযোগ দিলেই বোঝা যায়, শহরের ছেলেমেয়েদের চেয়ে গ্রামের ছেলেমেয়েদের ইন্দ্রিয়ানুভূতি তুলনামূলকভাবে প্রবল হয়। কারণ, ব্যতিক্রমহীনভাবে তারা ওই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়েই বেড়ে ওঠে। এখানে রবীন্দ্রনাথকে তাঁর দূরদর্শিতার নজরানা দিতেই হয়। এটাকে তিনি শিক্ষার অন্যতম অঙ্গ মনে করতেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us