চুক্তি অনুযায়ী প্লট-ফ্ল্যাট বুঝিয়ে না দেওয়া, পেশিশক্তির জোরে অন্যের জমি দখলে রাখা, জাল দলিল তৈরি করে ভূমির মালিকানা দাবিসহ জমিসংক্রান্ত নানা ধরনের অপরাধ প্রতিনিয়ত ঘটছে দেশে। কিন্তু ভূমির জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পূর্ণাঙ্গ আইন না থাকায় বিচারপ্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর। এবার সেই অপেক্ষার পালা ঘুচতে যাচ্ছে। অনুমোদনের জন্য শিগগির মন্ত্রিসভায় উঠছে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’।
ভূমি মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত আইনটির খসড়া যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। যাচাই শেষে এটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
‘দলিল যাঁর, জমি তাঁর’—এ ভাবনা থেকে ভূমি অপরাধ আইনের খসড়াটি প্রস্তুত করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত আইনে জমিসংক্রান্ত ২৪ ধরনের সুনির্দিষ্ট অপরাধ এবং এসব অপরাধের দণ্ড স্পষ্ট করা হয়েছে। আইনটি কার্যকর হলে ভূমির জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণা অনেকাংশে কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। গত ২৬ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক সম্মেলনে ভূমি মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত কর্ম-অধিবেশন শেষে তিনি বলেন, ভূমি অপরাধ আইনে অবৈধ ভূমি দখলকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। বছরের পর বছর কোনো জমি জোর করে কেউ দখলে রাখলেও যথাযথ দলিলাদি ছাড়া মালিকানার স্বীকৃতি পাবে না। ভূমিসংক্রান্ত সব ধরনের অপরাধের বিচারের সুযোগ রাখা হয়েছে এ আইনে।
জমিসংক্রান্ত অন্যতম উল্লেখযোগ্য অপরাধ হলো চুক্তি অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট কোম্পানি কর্তৃক জমি বা ফ্ল্যাটের দখল বুঝিয়ে না দেওয়া। প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী কোনো রিয়েল এস্টেট কোম্পানি চুক্তি অনুযায়ী জমি-ফ্ল্যাটের দখল বা দলিল হস্তান্তর না করলে সর্বোচ্চ ২ বছরের জেল বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।