বর্তমানে দেশের অধিকাংশ শহরের বাতাসই দূষিত। তবে রাজধানী ঢাকার অবস্থা সবচেয়ে করুণ। এই বায়ুদূষণ আমাদের নানা শারীরিক ক্ষতি করছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু শারীরিক নয়, এতে নানা মানসিক সমস্যাতেও ভুগছে মানুষ। বাড়ছে অবসাদ ও উদ্বেগ।
বায়ুদূষণ মূলত বাতাসে ভাসমান কঠিন ও জলীয় কণার মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি। এটা হতে পারে ময়লা, ধুলা, কালি বা ধোঁয়া। উৎপন্ন হতে পারে বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র, কারখানা, গাড়ি, কৃষি ও অন্যান্য যন্ত্র, কাঁচা রাস্তা, নির্মাণাধীন ভবন বা অন্যান্য স্থাপনা ইত্যাদি থেকে। তবে গবেষণাটিতে মূলত জোর দেওয়া হয়েছে বাতাসে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন ডাই–অক্সাইড ও নাইট্রোজেন অক্সাইডের উপস্থিতির প্রভাব নিয়ে। এসবের মূল উৎস গাড়ি। তবে যেকোনো জ্বালানি পুড়লেই এসব উৎপন্ন হয়।
গবেষণায় সবচেয়ে ক্ষুদ্র যে কণা বিবেচিত হয়েছে, সেটা আকারে এতই ছোট, চওড়ায় মাথার চুলের ২০ ভাগের ১ ভাগ হবে। এসব ক্ষুদ্র কণা সহজেই আমাদের শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। শ্বাসের সঙ্গে ঢুকে গেলেও নিশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে আসে না। বরং ফুসফুসে আটকে যায় এবং মিশে যায় রক্তপ্রবাহে। সৃষ্টি করে অস্বস্তি, প্রদাহ, এমনকি শ্বাসযন্ত্রের অসুখ। এসবের কারণে হতে পারে হাঁপানি। সৃষ্টি করতে পারে ক্যানসার, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি।
এসব শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি, দীর্ঘদিন বায়ুদূষণের শিকার হলে বাড়তে পারে মানসিক নানা সমস্যাও। আশঙ্কা থাকে অবসাদ বা উদ্বেগ পেয়ে বসার। এ ক্ষেত্রে নারীর চেয়ে পুরুষের ঝুঁকি আরও বেশি। যুক্তরাজ্যের প্রায় চার লাখ মানুষের ওপর চালানো এক জরিপে এমনটাই জেনেছেন গবেষকেরা। অবশ্য তাঁরা এর স্পষ্ট কোনো কারণের কথা বলতে পারেননি। তবে অনেকেই বলেন, বায়ুদূষণ মানুষের শ্বাসতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত করে। আবার কিছু কিছু উপাদান ক্ষতি করে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের প্রক্রিয়ার। অবসাদ ও উদ্বেগ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে এসবের সম্পর্ক থাকতে পারে। তবে সেটা নিশ্চিত করে বলার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।