বরিশাল নগরে মধ্যম মানের আবাসিক এলাকা ‘কালুশাহ সড়ক’। বিএনপি নেতা ও সাবেক মেয়র (প্রয়াত) আহসান হাবিব কামালের বাসভবন থাকায় সড়কটি সাধারণ মানুষের কাছে বেশ পরিচিত। তাঁর বাসভবন থেকে ৪০০ গজ দূরে ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি ইউনিটে প্রায় দেড় বছর আগে ভাড়াটিয়া হিসেবে আসেন ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। ব্যবসার প্রয়োজনে ঢাকা ও খুলনায় বসবাস করেন তিনি। মাসে দু-একবার শুক্রবারে এসে আবার শনিবার চলে যেতেন। দিনে সর্বোচ্চ ১০-১২ জন লোক তাঁর কাছে আসতেন বলে জানালেন ভবনটির কেয়ারটেকার। পাড়া-প্রতিবেশীর কাছে তেমন পরিচিতি ছিল না তাঁর। ভাড়াটিয়া সেই ব্যক্তি এখন শুধু কালুশাহ সড়ক নয়, গোটা বরিশাল নগরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।
নীরবে আসা-যাওয়ার প্রথা ভেঙে গত বৃহস্পতিবার তিনি এলেন শত শত মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে। এখন প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাড়িটিতে ভিড় থাকে। বাড়িটি এখন ‘নতুন বরিশাল’ গড়ার সূতিকাগার। এর স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর ভাগনে আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। আগামী ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
গত ১৬ এপ্রিল তাঁর মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর গোটা বরিশালের রাজনীতির দৃশ্যপট বদলে গেছে। একদিকে আলোকিত হয়েছে খোকন সেরনিয়াবাতের বাসভবন, অপরদিকে কালীবাড়ি সড়কে তাঁর পৈতৃক বাসভবন যেন অন্ধকারাচ্ছন্ন। পৈতৃক এই বাড়িতে বসেই আশির দশক থেকে বরিশাল আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন খোকন সেরনিয়াবাতের বড় ভাই জেলা সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি। পারিবারিক দ্বন্দ্বে কালীবাড়ি সড়কের পৈতৃক বাড়িতে কয়েক যুগ ধরে যান না খোকন সেরনিয়াবাত। হাসানাতের বড় ছেলে সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এই বাসভবন থেকে গোটা নগর নিয়ন্ত্রণ করতেন। মনোনয়ন বঞ্চনার পর ঢাকায় অবস্থান করছেন মেয়র সাদিক ও তাঁর বাবা হাসানাত আবদুল্লাহ। নগরীতে সাদিক সমর্থকরা এখন নীরব। জানা গেছে, ঈদের দিন কালীবাড়ি সড়কের বাসায় অনুসারীদের ফিরনি-মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন ঢাকায় অবস্থানরত মেয়র সাদিক।